উৎসবের দিনগুলিতে প্রতিবাদ মিছিলকে সামনে রেখে অশান্তি হতে পারে, এমনটা আশঙ্কা করছে লালবাজার। তাই শহরের শান্তি বজায় রাখতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। শহরের বেশ কিছু রাস্তায় ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ১৬৩ ধারা (আগের ১৪৪ ধারা) জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। এই রাস্তাগুলি হল, খিদিরপুর ক্লাব এবং বিধান মার্কেটের মাঝের রাস্তা, প্রেস ক্লাব সংলগ্ন জায়গা, নিউ রোড এবং মেয়ো রোড ক্রসিং। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ, ফেয়ারলি প্লেস এবং ইন্ডিয়ান এক্সচেঞ্জ, ওল্ড কোর্ট হাউস স্ট্রিট, স্ট্র্যান্ড রোড, শহিদ ক্ষুদিরাম বসু সরণি, ডালহৌসি, ব্রেবোর্ন রোড, লালবাজারের আশপাশেও জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বুধবার থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ওই সব রাস্তায় একসঙ্গে পাঁচ জনের জমায়েত নিষিদ্ধ। এ ছাড়া আরও তিনটি নির্দেশিকা জারি করেছেন কমিশনার। এই তালিকায় রয়েছে, বাড়িতে ভাড়াটে বা পেয়িং গেস্ট নিয়ে নির্দেশিকা। সেখানে বলা হয়েছে, পেয়িং গেস্ট বা ভাড়াটে রাখলে তাঁদের বিষয়ে যাবতীয় তথ্য সংশ্লিষ্ট থানায় জমা করা নিয়ম। বহু বছর ধরে এই নিয়ম রয়েছে। বহুবার লালবাজারের তরফে এ নিয়ে সব থানা এবং নাগরিকদের সতর্কও করা হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ বাড়ির মালিক এই সংক্রান্ত তথ্য জমা করেন না। থানার তরফেও এ বিষয়ে তৎপরতা দেখানো হয় না বলে অভিযোগ। নতুন নির্দেশিকায় সব থানাকে জানানো হয়েছে, ভাড়াটে বা পেয়িং গেস্টের তথ্য সংগ্রহে গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না।
এরই পাশাপাশি সাইবার ক্যাফে সংক্রান্ত বহু পুরোনো নির্দেশিকাও ফের সব থানাগুলিকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। সচিত্র পরিচত্রপত্র ছাড়া যাতে কেউ ক্যাফে ব্যবহার না করেন, সে দিকে নজর রাখতে হবে থানাগুলিকে। ক্যাফেতে যাঁরা ঢুকছেন, তাঁদের নাম লিখে রাখতে হবে। কোনও ব্যক্তির উপরে সন্দেহ হলে তিনি কোন কম্পিউটার ব্যবহার করেছেন, তা দ্রুত স্থানীয় থানায় জানাতে হবে।
শুধু তাই নয়, বর্জ পোড়ানোয় জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। কলকাতায় ক্রমাগত বেড়ে চলা দূষণের অন্যতম কারণ যত্রতত্র বর্জ্য পোড়ানো। প্রকাশ্য রাস্তায় বর্জ্য পোড়ানো বেআইনি। কিন্তু সেই আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অনেকেই যেখানে-সেখানে বর্জ্য একত্র করে আগুন ধরিয়ে দেন। শীতকালে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়। কলকাতা পুরসভা এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে এ বিষয়ে নজরদারির জন্য সম্প্রতি লালবাজারকে চিঠিও দেওয়া হয়েছিল। সেই অনুযায়ী শহরের সব থানাকে বর্জ্য পোড়ানো বন্ধে সক্রিয় হওয়ার কথা বলেছেন কমিশনার। যেমন নজরদারি বাড়াতে হবে, তেমনই কেউ বর্জ্য পোড়ালে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।