আরজি করের দুর্নীতি কাণ্ডে সিবিআইয়ের আতস কাচের তলায় দুই চিকিৎসক। সিবিআই র্যাডারে চিকিৎসক দেবাশিস সোম, সুজাতা ঘোষ। দুই চিকিৎসকের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে সক্রিয় যোগ রয়েছে। এদিকে সূত্রে খবর, দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য ভবনকে আর্জি জানিয়েছিল সিবিআই। সিবিআইয়ের এই চিঠির জবাব গেছে স্বাস্থ্য ভবনের তরফ থেকেও।
সূত্রে এ খবরও মিলছে, দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কী ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ তা সিবিআইয়ের কাছে জানতে চেয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের হলফনামাতেও বিষয়টির উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডে ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ, গ্রেফতার হয়েছেন আশিস পাণ্ডে। এবার আরও দুই চিকিৎসককে নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন চর্চা। স্বাস্থ্য ভবনকেও সিবিআইয়ের তরফে চিঠি লিখে এই দুই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সিবিআই-ও তাঁদের তদন্ত প্রক্রিয়া মেনে ব্যবস্থা নিতে পারে, সেই ইঙ্গিত রয়েছে চিঠিতে।
প্রসঙ্গত, আরজি করে গত ৯ অগাস্ট ঘটনার দিন সেমিনার রুমে দেবাশিস সোমের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। দুর্নীতি কাণ্ড থেকে তিলোত্তমা কাণ্ডে বারবার জড়িয়েছে তাঁর নাম। অন্যদিকে নাম উঠেছে এসেছিল সুজাতা ঘোষেরও। প্রসঙ্গত, ৩০ সেপ্টেম্বর যখন সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় জুনিয়র চিকিৎসকদের আইনজীবী বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরেছিলেন। সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ অনেক প্রভাবশালী চিকিৎসকের ভূমিকার কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। পাল্টা রাজ্যের তরফে রাকেশ দ্বিবেদী জানিয়েছিলেন সিবিআই যদি তাঁদের তালিকা দেয় তাহলে তাঁরা সেই মতো ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে সিবিআই সূত্রে খবর, আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় এবার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের স্টাফ ও আধিকারিক মিলিয়ে ৫ জনকে নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়। এই তলবের পরই নথি নিয়ে ৫ জনই হাজির হন সিবিআই দফতরে।
এদিকে, আরজি করের দুর্নীতি মামলার তদন্তে আবারও ইডির জেরার মুখে সন্দীপ ঘোষ। মঙ্গলবার আরজি কর দুর্নীতি কাণ্ডে অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষকে জেরা করতে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে যায় ইডির একটি দল। কারণ, আরজি কর দুর্নীতি কাণ্ডে এবার নজরে সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ চিকিৎসক, গ্রেফতার হওয়া আশিস পাণ্ডের একাধিক ইউপিআই লেনদেন। তাঁর ইউপিআই লেনদেন ঘিরে সিবিআইয়ের দাবি, ঘুষের টাকা এসেছে ইউপিআই লেনদেনের মাধ্যমেই। শুধু তাই নয়, তদন্তে এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে আশিস পাণ্ডের আরজি কর দুর্নীতি মামলার অন্যতম মূল অভিযুক্তদের সঙ্গে গভীর যোগসাজশ ছিল। অন্তত তেমনই দাবি সিবিআই সূত্রে। এরই পাশাপাশি ইডি সূত্রে দাবি, তদন্ত করতে গিয়ে একাধিক আর্থিক লেনদেন এবং বেআইনি টেন্ডার সংক্রান্ত তথ্য় পাওয়া গেছে। সূত্রের খবর, সেই তথ্য়প্রমাণগুলি সামনে রেখেই জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য় আলিপুর আদালতে আবেদন জানানো হয় ইডি-র তরফে। এরপরই আদালতের মান্যতা পেতেই মঙ্গলবার প্রেসিডেন্সি জেলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য় যান তদন্তকারী আধিকারিকেরা।