ছাব্বিশে বাংলায় পরিবর্তনের ডাক দিলেন বিজেপি নেতা তথা রুপোলি পর্দার ‘মহাগুরু’ মিঠুন চক্রবর্তী। বঙ্গ বিজেপির অন্দরমহলে শিথিলতা নিয়ে কম জল্পনা শোনা যায়নি গত নির্বাচনে। এবার বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানে দলের সংগঠন নিয়েও নিজস্ব মতামত পেশ করলেন মহাগুরু। এই প্রসঙ্গে তাঁর গলায় শোনা গেল ষাটের দশকের সেই চড়া নকশালপন্থী সুর।বলে রাখা শ্রেয়, উত্তর কলকাতার গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী অর্থাত্ আজকের এই মিঠুনের রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছিল নকশাল পর্বেই। তবে ঘটনাপ্রবাহে পারিবারিক চাপে রাজনীতি থেকে দূরে সরে মুম্বই পাড়ি দেন। তবে ফের তাঁকে সেই ফিরতেই হল রানজীতিতে।প্রথমে তৃণমূলের সঙ্গে সখ্যতা, এরপর একুশের বিধানসভার আগেই বড় চমক দেন বিজেপিতে যোগদান করে। রবিবার বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানের অনুষ্ঠানে চুয়াত্তরের মিঠুন যেন স্মরণ করলেন সেই ২৮–এর গৌরাঙ্গকে। মঞ্চে থেকে স্পষ্ট ভাষায় জানান, ‘আজ অভিনেতা হিসেবে নয়, আমি সেই ষাটের দশকের মিঠুন চক্রবর্তী বলছি। আমি রক্তের রাজনীতি করেছি। তাই রাজনীতির মারপ্যাঁচ আমার কাছে নতুন নয়। জানি, কোন পদক্ষেপে কোন কাজ হবে।’ এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সামনেই মিঠুন এও জানান, ‘অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করেন, আমি কেন প্রথম সারিতে সক্রিয়ভাবে থাকি না? কিন্তু আজ আপনারা যদি আমাকে জোর গলায় বলেন, বিজেপির সদস্য সংখ্যা ১ কোটি হবে, তবেই আমি আপনাদের ইচ্ছেপূরণ করব। আমিও কথা দিলাম, ২৬–এ এই মসনদ আমাদের হবে। তার জন্যে যা করতে হয় করব। আগামী নির্বাচনে এই সিংহাসন আমাদের হবেই। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সামনে বলছি– ‘কুছ ভি, মানে কুছ ভি।’- আর এই কথাটার একটা অন্তর্নিহিত অর্থ রয়েছে। গত নির্বাচনের সময়ে আমি ২৭ দিন ময়দানে নেমে প্রচার করেছি। কিন্তু বাংলায় বিজেপির ফলাফল দেখে খুব দুঃখ পেয়েছি।’ এরই রেশ ধরে মিঠুন এদিন এও জানান, ‘আমাদের এরকম একজন কার্যকর্তা চাই, যাঁরা বুক চিতিয়ে সামনে এসে লড়বে। গুলি খেলেও নিজের কর্তব্যে অবিচল থাকবে। যাঁরা টাকার বিনিময়ে কাজ করেন, আমাদের ওরকম কার্যকর্তার দরকার নেই। যদি অর্থের বিনিময়ে রাজনীতি করতেই হয়, তাহলে আমি করজোড়ে অনুরোধ করছি, বিজেপিতে যোগ দেবেন না।বিজেপি ছেড়ে দিন। তৃণমূলে যোগ দিন।’ এরই পাশাপাশি মিঠুনের সংযোজন, ‘যদি হিন্দু ভোটারদের ওঁরা ভোট না দিতে দেয়, তাহলে পরের বার আমরাও প্রস্তুতি সেরে রাখব যাতে ওঁদের ভোটাররা ভোট না দিতে পারে।’
প্রসঙ্গত, বঙ্গে এবার ১ কোটি প্রাথমিক সদস্য করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে বিজেপি। সেই কর্মসূচি সভায় যোগ দিয়েই মিঠুন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘নভেম্বর, ডিসেম্বর হোক বা আগামী বছরের মার্চ মাস, আমাকে দলের তরফে যেরকম নির্দেশ দেওয়া হবে, তখন থেকে ২০ দিন আমি দলের জন্য রাখব। আর বাকি ১০ দিন কাজের জন্য। এবার শুধু আপনাদের সাহস আর সমর্থন চাই। তাহলে ২৬–এ আমরাই রাজত্ব করব। বাকি ২৬–এর মসনদ আমাদেরই হবে।’