অনেকটাই স্বস্তিতে সুদীপ্ত রায়। টাকার বিনিময়ে দালাল চক্রের সাহায্যে বিক্রি হচ্ছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ–হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার এবং জেনারেল বেড। এমনই অভিযোগ উঠেছিল মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির প্রাক্তন চেয়ারম্যান ডঃ সুদীপ্ত রায় এবং সেন্ট্রাল ল্যাবের আধিকারিক জয়ন্ত সোমের বিরুদ্ধে। তবে জুনিয়র ডাক্তারদের করা এই অভিযোগের তদন্তে নেমে, অভিযোগের স্বপক্ষে কোনও তথ্য প্রমাণ পেল না হাসপাতালের গঠিত ১১ সদস্যের তদন্ত কমিটি। প্রসঙ্গত, এই তদন্ত কমিটিতে রাখা হয়েছিল জুনিয়র ডাক্তারদের ৪ প্রতিনিধিকেও।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ শে সেপ্টেম্বর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের স্টুডেন্ট ইউনিয়নের তরফে একজোড়া অভিযোগ জমা পড়ে। যার মধ্যে একটি ছিল বেড বিক্রির অভিযোগ। তবে এমন অভিযোগ সামনে আসার পর এবার সরকারি হাসপাতালে টাকার বিনিময়ে বেড বিক্রি ঠেকাতে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। সেগুলি দ্রুত কার্যকর করা হবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।প্রত্যেক রোগীর জন্য একটি ফিডব্যাক ফর্ম তৈরি করা হচ্ছে। সেই ফিডব্যাক ফর্মে থাকবে দশটি প্রশ্ন। প্রশ্নগুলির মধ্যে থাকছে, হাসপাতালে ভর্তি হতে কেউ টাকার দাবি করেছে কিনা? টাকা দিয়ে বেড পেতে হয়েছে কিনা? ওষুধ এবং অন্যান্য পরীক্ষা–নিরীক্ষার পরিষেবা বিনামূল্যে পাওয়া গিয়েছে, নাকি তার জন্য টাকা দিতে হয়েছে? হাসপাতালে ভর্তির জন্য কতক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে? হাসপাতাল কর্মীদের ব্যবহার কেমন? নার্স, চিকিৎসকদের ব্যবহার কেমন? চিকিৎসকরা ঠিকমতো পরিষেবা দিয়েছেন কিনা?
পাশাপাশি তদন্ত কমিটির আরও সুপারিশ, কোনও ব্যক্তিকে টাকা দেবেন না এই মর্মে হাসপাতালের পাবলিক এড্রেস সিস্টেমে অডিও বার্তা চালু হতে হবে। এই মর্মে হাসপাতালের একাধিক জায়গায় লিখিত নোটিস টাঙাতে হবে। রোগীদের জমা দেওয়া ফিডব্যাক ফর্ম তিনটি স্তরে পরীক্ষা করতে হবে। পুলিশের নজরদারি বাড়াতে হবে দালাল ঠেকাতে। মৌরসিপাট্টা ঠেকাতে হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের নিয়মিত এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগে নির্দিষ্ট সময় অন্তর শিফট করতে হবে। হাসপাতাল কর্মীদের আইকার্ড ব্যবহার করা এবং ইউনিফর্ম পড়ে থাকা বাধ্যতামূলক করতে হবে। প্রভাব খাটিয়ে আগে থেকে বেডবুক করে রাখা বন্ধ করতে হবে। কত বেড খালি আছে তার লাইভ স্ট্রিমিং করতে হবে হাসপাতালে দেখা যায় এমন জায়গায়। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে দ্রুত কড়া পদক্ষেপ করতে হবে।