জাতির ভবিষ্যৎ গড়তে সরকার, সমাজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিল্পের একসঙ্গে এগিয়ে আসার প্রয়োজন, বার্তা সিআইআই-এর

য়ে কোনও  সম্প্রদায় বা জাতির ভবিষ্যৎ কল্যাণের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা অপরিহার্য। একইভাবে, আমাদের মাপকাঠিগুলি বিচার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত, যেখানে সরকার, সমাজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পকে অবশ্যই নিখুঁতভাবে কাজ করতে হবে। শুক্রবার কলকাতায় এমনটাই জানালেন সিআইআই ইস্টার্ন রিজিয়ন আয়োজিত তৃতীয় এডুকেশন ইস্ট সামিটএ এআইইউএর অতিরিক্ত সচিব, এআইসিটিইএর প্রাক্তন উপদেষ্টা এবং ইউজিসির প্রাক্তন যুগ্ম সচিব ডঃ মমতা রানি আগরওয়াল। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আরও উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য শিল্পোদ্যোগকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, দক্ষতার প্রশিক্ষণ দ্বারা চিহ্নিত শিক্ষার ভবিষ্যৎ আসন্ন চাকরির প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য যৌক্তিক ও সৃজনশীল চিন্তাভাবনা উভয়কেই কার্যকরভাবে সংহত করার জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাককিনসির একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে শিল্প নিয়োগের প্রবণতাগুলির মধ্যে ৮৫ শতাংংশ ম্যানেজার ফ্রিল্যান্স ভূমিকার জন্য নিয়োগের সময় শিক্ষাগত ডিগ্রির পরিবর্তে প্রার্থীদের দক্ষতাগুলিতে মনোনিবেশ করে। যা শিল্প নিয়োগের প্রবণতাগুলিতে একটি পরিবর্তন এনেছে।

এরই রেশ ধরে ডাঃ আগরওয়াল এদিন এও বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের রিপোর্ট ইঙ্গিত করে যে ২০২৭ সালের মধ্যে, ৭৫ মিলিয়ন পুনরাবৃত্তিমূলক এবং ম্যানুয়াল চাকরি অদৃশ্য হয়ে যাবে, যেখানে ১২২ মিলিয়ন নতুন পদে বিভিন্ন দক্ষতা প্রয়োজন। এই প্রসঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেন যে ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক পেশাদারদের একটি প্রজন্মকে তৈরি করছে এবং আঞ্চলিক সীমাবদ্ধতাগুলি কাটিয়ে উঠতে বহু ভাষায় শিক্ষা প্রদান করছে।

শুক্রবার ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশনের ডেপুটি হাই কমিশনার অ্যান্ড্রু আলেকজান্ডার ফ্লেমিং তাঁ বক্ব্য রাখতে গিয়ে জানান, ২০২১২২  শিক্ষাবর্ষে মোট ১২৬,৫৩৫  জন ভারতীয় শিক্ষার্থী হিসেবে ইংল্যান্ডে গেছেন। এর থেকে এটা স্পষ্ট যে, এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে এটি ভারতীয়দের কাছে দ্বিতীয় সর্বাধিক জনপ্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে। উপরন্তু, গত বছরে, ইউনাইটেড কিংডম  ভারতীয় নাগরিকদের ১৪২,৮৪৮ জন ছাত্রকে ভিসা প্রদান করেছে। এই পরিসংখ্যান ভারতীয় ছাত্রদের ইংল্যান্ডে প্রতি তাঁদের বিশেষ য়ে আকর্ষণ রযেছে তাতে  উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির এক ইঙ্গিত দেয়। সঙ্গে এও জানান, ইংল্যান্ডে ছাত্রছাত্রী পাঠানোর ক্ষেত্রে চিনকে ছাপিয়ে গিয়েছে ভারত। বর্তমানে, জাতীয় শিক্ষানীতি (এনইপি) ২০২০ ভারতের শিক্ষার ক্ষেত্রে রূপান্তরকারী হিসাবে প্রমাণিত। এই নীতির লক্ষ্য হল ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিককরণ করা, যার ফলে আরও বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী আকৃষ্ট হবে। পাশ্চাত্য দেশগুলির ছাত্রছাত্রীদের জন্য উচ্চশিক্ষার জন্য ভারতকে বিবেচনা করাও অপরিহার্য।

এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইআইএম কলকাতার ডিরেক্টরইনচার্জ অধ্যাপক শৈবাল চট্টোপাধ্যায়ও। শিক্ষার ভবিষ্যতের গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে বলেন, প্রযুক্তি উল্লেখযোগ্য সুবিধা প্রদান করে। যদিও বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মেশিন লার্নিং ব্যবহার করা হয়, তবে প্রতি দুই বছর অন্তর এগুলি আপডেট করা হয়, যার ফলে শিক্ষা ব্যবস্থায় তাদের সংহতকরণের প্রয়োজন হয়। শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বর্তমান দক্ষতা অর্জন নিশ্চিত করার জন্য, শিল্পের অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের জন্য তাদের প্রশিক্ষণের জন্য  অপরিহার্য।

এদিনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উজ্জ্বল চক্রবর্তী, চেয়ারম্যান, সিআইআই ইআর এডুকেশন অ্যান্ড স্কিল ডেভেলপমেন্ট সাবকমিটি এবং এক্সিকিউটিভ ইনচার্জটিনপ্লেট ডিভিশন, টাটা স্টিল লিমিটেড ইঙ্গিত দেন যে ভারত তার শিক্ষা ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। তিনি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারীদের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য শিক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন, যেখানে বহুবিষয়ক শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

সিআইআই ইস্টার্ন রিজিয়ন এডুকেশন সাবকমিটির মেন্টর এবং টেগা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান মদন মোহঙ্কা জানান, ছাত্রছাত্রীদের জন্যঅপার আইডিকার্যকর করার ফলে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়। সঙ্গে এও বলেন, বিশ্বে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক করে তুলতে হবে। প্রযুক্তিগত সৃজনশীলতার যেকোনো ধরনের মতোই মানব সংযোগ ও বোঝাপড়ার ভূমিকা অপরিহার্য।

সিআইআই ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এবং টাটা স্টিল ডাউনস্ট্রিম প্রোডাক্টস লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সন্দীপ কুমার তাঁর বক্তব্য রাখতে গিয়ে জানান, ২০৫০ সালের মধ্যে ভারতের জনসংখ্যা ১০০ কোটিতে  পৌঁছে যাবে, যেখানে বিশ্ব কর্মশক্তির প্রতিটি চতুর্থ কর্মী ভারত থেকে আসবে। নতুন দক্ষতার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করতে শিল্প ও একাডেমিয়ার সহযোগিতার মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তা কর্মশক্তিতে বিনিয়োগ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen + six =