আরজি কর মডেলেই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ। ন্যাশনালে আরজি করের ধাঁচে ওষুধ, চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয় নিয়ে সামনে এল অ্যাডিশনাল মেডিক্যাল সুপার কিংশুক বিশ্বাসের লেখা একাধিক বিস্ফোরক চিঠি। এমএসভিপি অর্ঘ্য মৈত্রকে লেখা এই চিঠিতে অতিরিক্ত মেডিক্যাল সুপার কিংশুক বিশ্বাস অভিযোগ জানিয়েছেন, যাচাই না করেই বিলে সই করার জন্য অতিরিক্ত মেডিক্যাল সুপারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। অর্থ দফতরের নিয়ম মেনে হচ্ছে না ই–টেন্ডার। আরজি করের মতোই পছন্দের ভেন্ডরদের ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জামের বরাত দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। সরকারি তালিকায় থাকা ওষুধ ইনডেন্ট হলেও অনিয়মিতভাবে হচ্ছে সরবরাহ। সরবরাহের ঘাটতি দেখিয়ে ঘুরপথে পছন্দের ভেন্ডরদের বরাত দেওয়া হচ্ছে। তাতেই কোটি কোটি টাকা সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে বলে অভিযোগ।
শুধু তাই নয়, এমএসভিপি অর্ঘ্য মৈত্রকে চিঠি লিখে অতিরিক্ত মেডিক্যাল সুপার কিংশুক বিশ্বাস এও জানিয়েছেন, আরজি করের মতো অর্থ দফতরের নিয়ম না মেনে ই–টেন্ডার না ডেকে পছন্দ মতো ভেন্ডরদের দেওয়া হচ্ছে ওষুধ–চিকিৎসা সামগ্রীর বরাত। বিল যাচাই না করে সই করানোর জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, সরকারি নিয়মে বিল যাচাই করে সই করেন অতিরিক্ত মেডিক্যাল সুপার (এএমএস)। ন্যাশনালে সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। আর এই সরকারি নির্দেশনামা নাকি মানছেন না অতিরিক্ত মেডিক্যাল সুপারের নিশানায় এমএসভিপি’র কার্যালয়ের আধিকারিকদের একাংশ। প্রসঙ্গত, ন্যাশনালের এমএসভিপি থেকে আরজি করের অধ্যক্ষ হন সন্দীপ ঘোষ। সেই সূত্রেই দুর্নীতির অভিযোগে এবার ভিন্ন মাত্রা যোগ।
এদিকে আরজি কর দুর্নীতি কাণ্ডে ন্যাশনালেও হানা দিয়েছে সিবিআই। এমতাবস্থায়, অ্যাডিশনাল মেডিক্যাল সুপারের চিঠি অস্ত্র হতে পারে সিবিআইয়ের, এমনটাই ধারনা ওয়াকিবহাল মহলের। এরইমধ্যে ন্যাশনাল মেডিক্যালে কেলেঙ্কারির জল গড়িয়েছে রাজ্য গ্রিভান্স সেল পর্যন্তও। জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের জেরে এ ধরনের ঘটনায় নিষ্পত্তি করতেই রাজ্য গ্রিভান্স সেল গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীরকার্যালয়েওআর্থিকঅনিয়মনিয়েপাঠানোহয়েছেঅভিযোগ।
এদিকে অভিযোগ প্রসঙ্গে ন্যাশনালের এমএসভিপি অর্ঘ্য মৈত্র জানিয়েছেন, ‘আমার সঙ্গে অন্তত দুর্নীতির সম্পর্ক নেই।’ এরপরই এমএসভিপি’র এই প্রতিক্রিয়ায় তুঙ্গে জল্পনা। তবে দুর্নীতির অভিযোগ ওড়াননি অতিরিক্ত মেডিক্যাল সুপারও।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, অতীতেও এএমএসের অফিস এড়িয়ে সই হয়েছে একের পর এক বিল। অভিযোগ সামনে আসতেই তা নিয়ে নতুন করে শোরগোল শুরু হয়ে গিয়েছে স্বাস্থ্য মহলের অন্দরে। এখন দেখার শেষ পর্যন্ত জল কোনদিকে গড়ায়।