নরওয়ে সফরে যাচ্ছেন না তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে কদিন আগে নয়াদিল্লিতে নরওয়ের দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছিল, নভেম্বরে নরওয়ের রাজধানী অসলো সফরে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তৃণমূল সাংসদকে।
সূত্রে খবর, লিঙ্গ সাম্য ও মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য নরওয়ে সরকার সেখানে যে নীতি বাস্তবায়িত করেছে, সে ব্যাপারে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তৃণমূল সাংসদকে। ১৭ থেকে ২২ নভেম্বর পাঁচ দিনের সফরে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল অভিষেককে।
এই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের ধারনা, বাংলায় তৃণমূল সরকারের মেয়াদে মহিলাদের আর্থসামাজিক ক্ষমতায়ণের জন্য ‘কন্যাশ্রী’, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর মতো প্রকল্পের রূপায়ণ করেছে। সম্ভবত এই সব কারণেই বাংলার শাসক দলের প্রতিনিধিকে ডাকা হয়েছিল অসলো কনভেনশনে। তবে দ্য ওয়ালকে অভিষেক জানিয়েছেন, তিনি আপাতত নরওয়ে সফরে যাচ্ছেন না। এ ব্যাপারে নরওয়ে দূতাবাসকে তাঁর অপারগতার কথা জানিয়ে দিয়েছেন।
ঘটনা হল, নরওয়ে সফর বাতিল করার ব্যাপারে অভিষেকের এই সিদ্ধান্ত আবার দলের মধ্যে একটা আলোড়ন তৈরি করেছে। বিষয়টি সর্বস্তরের নেতারা এখনও জানেন না বলেই সূত্রে খবর। তবে কালীঘাট ঘনিষ্ঠ শীর্ষসারির কয়েকজন নেতার গোচরে তা রয়েছে। এবং তাঁরা মনে করছেন, তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদল এবার যে কোনওদিন ঘটে যেতে পারে।
কালীঘাটের ঘনিষ্ঠ সূত্রে এও খবর, প্রস্তাবিত ও সম্ভাব্য রদবদলের কয়েকটা স্তর রয়েছে। সাংগঠনিক রদবদলের ক্ষেত্রে প্রথমে জেলা ও ব্লক স্তরে বদল ঘটানো হবে। সেই সঙ্গে অভিষেক আগেই ইঙ্গিত দিয়েছেন যে পুরসভা ভোটে যেখানে যেখানে খারাপ ফলাফল হয়েছে সেখানে পুরসভার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান দুজনকেই সরানো হবে। পরিবর্তে নতুন মুখ আনা হবে।
জেলা সংগঠনের পাশাপাশি তৃণমূলের যুব ও ছাত্র সংগঠনে রদবদলও একপ্রকার অনিবার্য। শেষ মুহূর্তে কৌশলের কোনও বদল না ঘটলে যুব সভানেত্রীর পদ থেকে সরানো হতে পারে সায়নী ঘোষকে। সায়নীর থেকে জেলা স্তরে যুব সংগঠনে রদবদলের জন্য সুপারিশ অনেক আগেই নিয়ে রেখেছেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। ২১ জুলাইয়ের আগে সেই পর্ব সম্পন্ন হয়েছে।
একই ভাবে রদবদলের সম্ভাবনা রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদেও। দলের রাজ্য নেতাদের অনেকের মতে, ছাত্র ও যুব সংগঠন ঢেলে সাজানো জরুরি। দলের এই দুই ফ্রন্টাল অর্গানাইজেশন যে ভোঁতা, অকেজো এবং একেবারেই কার্যকরী নয়, তা সম্প্রতি আরজি কর পর্বেও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
জেলা সংগঠনে রদবদলের পর দলের রাজ্য সংগঠনেও কিছু বদল হতে পারে। তবে তা নিয়ে এখনও যে আলোচনা খুব এগিয়েছে তা নয়। মূলত জেলা ও পুরসভা স্তরে বদল নিয়েই সবিস্তার সমীক্ষা করেছে আইপ্যাক। তাদের সুপারিশ মোতাবেক একটা খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। কালীঘাট ঘনিষ্ঠ নেতাদের মতে, সংগঠনে এই সব রদবদল হয়ে যাওয়ার পর রাজ্য মন্ত্রিসভাতেও কিছু বদল অনিবার্য ভাবে হতে পারে। ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগে সেটা হবে মন্ত্রিসভার শেষ রদবদল।