থ্রেট কালচার নিয়ে তৃণমূলের কাজিয়া এবার প্রকাশ্যে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে দেখা গেল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মেডিক্যালে সাসপেন্ডেড ছাত্রদের পাশে না দাঁড়ানোয় তৃণাঙ্কুরকে এক হাত নেন কল্যাণ। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতির পদ থেকে তৃণাঙ্কুরকে সরানোরও দাবি তোলেন তিনি। কল্যাণের অভিযোগ, তৃণমূল করায় বাম–অতিবামের থ্রেট কালচারের মুখে ডাক্তারি পড়ুয়াদের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে তৃণাঙ্কুর তাঁদের পাশে দাঁড়াননি।বরং সেখানে তিনিও তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ ছাত্রদের পাশে থেকে কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছেন বলেও দাবি করেন।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এহেন দাবির পর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ অন্দরে ভাঙন ধরতে শুরু করেছে কি না তা নিয়েই। সঙ্গে এ প্রশ্নও উঠেছে, তৃণাঙ্কুর বিরোধী লবি সক্রিয় হয়ে উঠেছে কি না তা নিয়েও। কারণ, বেশ কিছুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে, তৃণাঙ্কুর বিরোধী লবি নাকি দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয়। আর তারই জেরে সংগঠনের মধ্যেই নাকি চাপে সভাপতি তৃণাঙ্কুর। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগে তৃণাঙ্কুর বিরোধী এই লবি বাড়তি অক্সিজেন পেয়েছে বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেতাদের একাংশ। এদিকে তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলে এও শোনা যাচ্ছে, টিএমসিপি–র ভূমিকায় খুশি নন তৃণমূল নেতৃত্ব।
অপসারিত টিএমসিপি নেত্রী রাজন্যা হালদার বলেন, ‘অনেক নেতা–নেত্রী যাঁরা এই প্রশ্ন করছেন, তাঁরাও কিন্তু ক্রাইসিস মোমেন্টে জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে থাকেনি। যদি কেউ থেকে থাকে, যিনি সামনে থেকে কেসটি লড়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন, তাঁর নাম প্রান্তিক চক্রবর্তী। সুতরাং এই প্রশ্ন করার অধিকার আর স্টেপ ডাউনের ডিম্যান্ড, যেটা তিনি করছেন, সেটা করার অধিকার কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেই। আর তিনি যাঁর বিরুদ্ধে করছেন, তিনিও যে নিরুত্তর, সেটাও স্বাভাবিক। কারণ তাঁরা কেউই সে সময়ে জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে ছিলেন না।’
এদিকে এই ঘটনায় টিএমসিপি–র অপসারিত সহ সভাপতি প্রান্তিক চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘ডাক্তারি ছাত্ররা যখন অসহায় হয়ে পড়েছিলেন, তখন তিনিই বা কোথায় ছিলেন? আমাকে ছবিটি বন্ধ করতে বলার পর, আমি বন্ধ করেছিলাম। এটা দলীয় শৃঙ্খলা। এখানে যিনি বলেছেন, তিনি দলের বড় হিসাবে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলেন। টিএমসিপি–র সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের আরও সক্রিয় হওয়া উচিত ছিল।’ এখানে উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে একটি ‘শর্ট ফিল্ম’ তৈরি করেছিলেন প্রান্তিক চক্রবর্তী। তাতে অভিনয় করেছিলেন রাজন্যা। দল সেই শর্ট ফিল্ম মুক্তির অনুমতি দেয়নি। এই গোটা বিষয়ে তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় জানান, ‘ আমার অনেক ব্যাপারেই জানা নেই। আমি যেহেতু কোনও সাংগঠনিক দায়িত্বে নেই, কেন মুখ খুলেছে, কী বলেছে, তার সত্যতা কী, তা বলতে পারব না।’