সবার অলক্ষ্যে পূর্ব কলকাতার বুকে তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ, অভিযোগ বিজেপির

সবার অলক্ষ্যে কলকাতার বুকে তৈরি হয়েছে ‘মিনি বাংলাদেশ’। যেখানে উপযুক্ত নথি ছাড়াই আশ্রয় নিচ্ছে একের পর এক অনুপ্রবেশকারী। এমনই ছবি পূর্ব কলকাতার কসবার  গুলশন কলোনিতে। শুধু বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নয়, সেখানে ঘাঁটি বানাচ্ছে রোহিঙ্গারাও। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তোলা হয়েছে বঙ্গ বিজেপির তরফ থেকে। বঙ্গ বিজেপি শিবির সূত্রে খবর, এই ইস্যুতে আদালতেও যাচ্ছে তারা।প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত কুখ্যাত এই গুলশন কলোনি। যেখানে খুনখারাপি, বোমাবাজি লেগেই থাকে। এবার তো এলাকার কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে খুনের চেষ্টা করা হয় নিজের ওয়ার্ডেই। অভিযোগ, এই এলাকায় জমি মাফিয়াদের দাপট। পুকুর বুজিয়ে একের পর এক বেআইনি ইমারত তৈরি হচ্ছে। বানানো হচ্ছে ঘুপচি ঘর থেকে গোডাউন। স্থানীয়ের দাবি, এই কুকর্মের নেপথ্য রয়েছে গুলশান কলোনির অন্যতম কুখ্যাত জমি কারবারি জুলকার।১০৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কাউন্সিলর হয়ে আসার পর সুশান্ত ঘোষ এবং এই গুলশান কলোনিতে তার দায়িত্বপ্রাপ্ত হায়দার আলি ওই ভরাট রুখে দেয়। এর পর থেকে বিবাদ চরমে ওঠে জুলকারের সঙ্গে সুশান্ত ঘোষের। তার পরই এই হামলা। যা নিয়ে সুশান্ত ঘোষই দাবি করেছেন, জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করার পরই তাঁকে টার্গেট করা হয়েছে। উল্লেখ্য. আফরোজ বা গুলজার তখন জুলকারের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যাকে এই শুট আউটের ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আবার তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ জুলকার আলি পালটা সুশান্ত ঘনিষ্ঠ হায়দারের বিরুদ্ধে জমি ভরাটের অভিযোগ এনেছে।

এবার সেই এলাকা নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করতে দেখা গেল  বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পন্ডাকে। তিনি জানান, ‘গুলশন কলোনিতে পায়রার খোপের মতো ছোট ছোট যে ঘর তৈরি হচ্ছে, কার ঘর কেউ জানে না। মালিকের কোনও ঠিক ঠিকানা নেই। যার দখলে রয়েছে সে ভাড়া দিচ্ছে। জমি লুট করে কোটি কোটি টাকা রোজগারও হচ্ছে।’ এখানেই শেষ নয়, বিজেপি নেতা শঙ্কুর আরও দাবি, ‘বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতীরা এসে এখানে থাকছে। এলাকার একের পর এক ঝিল সব বুজিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ওখানে বাংলাদেশের সন্ত্রাসবাদীদের একটা হাব তৈরি হয়েছে। এখুনি ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে এটা ভয়ঙ্কর দিকে চলে যাবে।’ এই সূত্র ধরেই শঙ্কুদেব পন্ডার হুঁশিয়ারির সুরে জানান, ‘আমাদের কাছে সমস্ত নথি রয়েছে। আমরা আদালতে যাব।’

এদিকে গুগল ম্যাপ দেখলে দেখা যাবে, এখন যেখানে গুলশন কলোনি গড়ে উঠছে সেখানে ছিল বিশাল ভেড়ি। এখন সেই ভেড়ি বুজিয়ে ছোট ছোট ঘর তৈরি হয়েছে। কিন্তু কে এই ঘরের মালিক, তা অজানা। লাগাতর অভিযোগের জেরে সোমবারই ঘটনাস্থলে গিয়েছেন বিএলআরও।প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের শুরুর দিকে এই গুলশন কলোনি থেকেই ২২ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। পুলিশের নজর এড়িয়ে ধৃতরা নানা বেআইনি কাজ চালাত। অভিযান চালিয়ে গুলশন কলোনির একটি নির্মীয়মাণ বাড়ি থেকে ১৬টি তাজা বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির মশলা। প্রোমোটিং সংক্রান্ত বিবাদের জেরে গুলি চালানোর ঘটনাও ঘটে সেখানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 − 3 =