১ শতাংশেরও কম বুথে ঘটেছে অশান্তি, দাবি তৃণমূলের

পঞ্চায়েত ভোটের দিন দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াল রাজ্যের বিভিন্ন অংশে। যদিও এই অশান্তির ঘটনা ১ শতাংশেরও কম বুথে ঘটেছে সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই দাবি করা হল শাসকদল তৃণমূলের তরফ থেকে। শুধু তাই নয়, বাম-কংগ্রেস- বিজেপি-আইএসএফ-এর পাশাপাশি শাসক শিবিরের বিদ্ধ করে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকেও।

শনিবারের সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা জানান, ‘কুৎসা, অপপ্রচার করেছে বিরোধীরা -বাম, বিজেপি, কংগ্রেস আইএসএফ। তারা চেয়েছিল সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে না হয়। কিন্তু, ১৩-১৪ জেলায় শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। প্রায় ৬১ হাজার বুথের মধ্যে বড় অশান্তি ৮ থেকে ৯ টা বুথে এবং ছোটখাটো সবমিলিয়ে ৬০টা বুথে অশান্তির খবর সামনে এসেছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা কী ছিল তা প্রশ্ন উঠেছে। দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, কোন দলে ভোট দিতে হবে তা সেই বিষয়েও প্রভাব খাটিয়েছে বিএসএফ।’ একইসঙ্গে মন্ত্রী শশী পাঁজার সংযোজন, ‘প্রত্যেটি মৃত্যু দুঃখজনক। দল মত নির্বিশেষে কোনও মৃত্যু কাম্য নয়। তবে যতজনের মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে ৬০ শতাংশ তৃণমূলের কর্মী।’

এদিকে এদিনের এই সাংবাদিক বৈঠক থেকে ভোটের হিংসা নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলগুলির দিকে আঙুল তোলেন তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এদিন তৃণমূলের তরফে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করা হয়। কুণাল ঘোষ বলেন, ‘বিরোধী দল আর কেউ কেউ আতঙ্কের বিপণন করছেন। আজ সকাল থেকে দেখুন তৃণমূলের মারা যাচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস কি চাইবে তৃণমূল কংগ্রেসকে মারতে? তৃণমূল মারা গেলে বলা হচ্ছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আর বিরোধী মারা গেলে বলবেন সন্ত্রাস।’  এরপরই নাম না করে সামনে আনেন শুভেন্দুর প্রসঙ্গ। বলেন, ‘বিজেপির এক নেতা বলছেন তিনি দিল্লিতে গিয়ে টাকা আটকে দেবেন। ভোটের সঙ্গে টাকা আটকে দেওয়ার কী সম্পর্ক! এটা প্রতিহিংসার রাজনীতি। বিরোধীরা বুঝে গিয়েছেন মানুষ তাঁদের সঙ্গে নেই। তাই বাংলাকে কলুষিত করতে এই সমস্ত বলছেন। আর তাঁদের অভিভাবক হয়েছে রাজ্যপাল।’

একইসঙ্গে বিরোধী শিবিরকে বিদ্ধ করে এও জানান, ‘বিরোধীরা জানে তারা জিততে পারবে না। তৃণমূল কংগ্রেস ব্যাপক ভোটে জিতবে। নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা।’ এখানেই শেষ নয়, তুলে আনেন বাম জমানার প্রসঙ্গও। বলেন, ‘বাম জমানায় ভোটের দিন ৬০-৭০-৮০ জন মারা যেত। এখন অনেক কমেছে। সিপিএমের অতীত, সিপিএমের ভোট মনে আছে? বিজেপি শাসিত রাজ্যের অবস্থা মনে আছে?’ এরই রেশ ধরে কুণাল এও বলেন, ‘আসলে ভোটের ফলাফল থেকে নজর ঘোরাতে পরিকল্পিত ভাবে অশান্তি করছে। তৃণমূল কংগ্রেস একাধিক অভিযোগ করেছে। আর যারা ৩৫৫ বা ৩৫৬ করছেন, তারা আগে মণিপুর করে আসুন। তারপর বাংলার কথা বলবেন। মামার বাড়ির আবদার নাকি ৩৫৫ বা ৩৫৬।’ এরই রেশ ধরে কুণাল বিজেপিকে বিদ্ধ করে এও বলেন, ‘মণিপুর জ্বলছে আগে তা ঠিক করুন। আগে মণিপুরের দিকে নজর দিন। অতি সামান্য অশান্তি ছাড়া নির্বিঘ্নে বাংলায় উৎসবের আমেজে ভোট হয়েছে।’

এদিনের সাংবাদিক বৈঠক থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে মুখ খোলেন ব্রাত্য বসুও। তাঁর প্রশ্ন, ‘ব্যালট বক্সে কারা জল ঢালল? বাদুড়িয়ায় কারা ছাপ্পা ভোট দিল? যারা মারা যাচ্ছেন, তারা অধিকাংশ হল তৃণমূল কংগ্রেস। আসলে বিরোধীদের কৌশল চোরকে বলছে চুরি করো, আর গৃহস্থকে বলছে সজাগ থাকো। আর কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করছে। চার বিরোধী দল ও তার অভিভাবক হিসাবে আর্বিভূত হয়েছেন রাজ্যপাল। আপনারা সত্যের পক্ষে থাকুন। দিনহাটা থেকে বাদুড়িয়া আক্রান্ত হয়েছে তৃণমূল। মারা গেছেন তৃণমূল কংগ্রেসকর্মী ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − 12 =