রায় ঘোষণার পর বিচারককে ধন্যবাদ নির্যাতিতার বাবা-মায়ের

আরজি কর কাণ্ডে রায়দানের ময় আদালতে হাজির ছিলেন নির্যাতিতার বাবা মা এবং পরিবারের সদস্যরাও। শনিবার আদালত সঞ্জয় রাইকে দোষী সাব্যস্ত করার পর বিচারক অনির্বাণ দাসকে ধন্যবাদ জানান নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা-মা।

মেয়ের জন্য বিচার চেয়ে গত পাঁচ মাস ধরে লড়াই করছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। অবশেষে শনিবার আরজি কর কাণ্ডে চিকিৎসককে ধর্ষণ খুনের ঘটনায় রায় ঘোষণা করে আদালত। যদিও সেই রায় ঘোষণার আগে সিবিআই-এর বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক অভিযোগ করতে দেখা যায় নির্যাতিতার বাবাকে।

অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় দোষী সাব্যস্ত হবে কি হবে না, আদালতে তা ঘোষণার আগের মুহূর্তেও তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে একরাশ প্রশ্ন এবং অভিযোগে সরব হতে দেখা যায় তাঁকে। এরই পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, সিবিআই-এর পক্ষ থেকে তাঁদের সঙ্গে কার্যত কোনও যোগাযোগই রাখা হয় না৷ এমন কি, শেষ কয়েকদিন আদালতে বিচারপ্রক্রিয়া কীভাবে এগিয়েছে, তা নিয়েও কোনও ধারণা নেই তাঁদের। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘আমাদের আইনজীবী এবং সিবিআই আমাদের আদালতে যেতে নিষেধ করেছে। ফলে শেষ কয়েকদিন আদালতে কী হয়েছে, আমরা কিছুই জানি না। সিবিআই কোনওদিনই আমাকে কোথাও ডাকেনি। শুধু আমরা তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে জানতে চাইলে তাঁরা আমাদের বাড়িতে দু-একবার এসে জানিয়েছেন তদন্ত চলছে।’

নির্যাতিতার বাবারও আরও দাবি, ‘আমার মেয়ের ঘাড়ের কাছে একাধিক কামড়ের দাগ ছিল। কিন্তু সেখান থেকে লালার নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। ময়না তদন্তের রিপোর্টেও কোনও জোরাল প্রমাণ নেই। সিবিআই খুব বেশি কিছু করেনি। এই ঘটনায় বড় কেউ অবশ্যই জড়িয়ে রয়েছে। ডিএনএ রিপোর্টে ঘটনাস্থলে চারজন পুরুষ এবং দু জন মহিলার উপস্থিতির উল্লেখ রয়েছে। আমরা চাই এই ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের শাস্তি হোক।’

গত ৯ অগাস্ট আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ করে খুন করা হয় ওই চিকিৎসক পড়ুয়াকে৷ তদন্তে নেমে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই মূল অভিযুক্ত হিসেবে সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও প্রথম থেকেই কলকাতা পুলিশের তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করে নির্যাতিতার পরিবার৷ এর পরই ঘটনার তদন্তভার যায় সিবিআই-এর হাতে।

এরপর এদিন বিচারক রায়দান শেষ করার পরই উঠে দাঁড়ান নির্যাতিতার বাবা৷ বিচারক অনির্বাণ দাসের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনার উপর ভরসা রেখেছিলাম। আপনি পূর্ণ মর্যাদা দিয়েছেন।’ এ কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি৷ এরপরই আসন ছেড়ে উঠে যান বিচারক।

আদালতের বাইরে এসেও নির্যাতিতার বাবা বলেন,বিচারের প্রথম সিঁড়ি আজকে আমরা পার করেছি৷ যাতে আমরা দ্বিতীয় সিঁড়িতে উঠতে পারি, তার উনি এরকমই কিছু একটা রায় দেবেন, আমাদের এই বিশ্বাস ছিল। একইসঙ্গে এও বলেন, বিচারককে ধন্যবাদ দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই, যেভাবে বিচারক এই বিষয়টিকে দেখেছেন তাতে আমরা ওনার কাছে কৃতজ্ঞ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − four =