আরজি কর হাসপাতালে একজন কর্মরত চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সোমবার ‘একমাত্র’ অভিযুক্ত সঞ্জয় রাইকে আমৃত্যু কারাবাসের সাজা শুনিয়েছে শিয়ালদহের জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস। কিন্তু আদালতের রায়ের পরও বঙ্গবাসী যেন খুশি নয়। কারণ, যাবজ্জীবন নয় সঞ্জয়ের ফাঁসি চেয়ে সুর চড়িয়েছে একাংশ। রায় শুনে সন্তুষ্ট হননি খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও। তাঁর দাবি, ‘ফাঁসি হলে মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম।’ সন্তুষ্ট হননি তিলোত্তমার বাবা-মাও। সম্পূর্ণ বিচার যে এখনও পাননি নির্যাতিতা, এমনটাই দাবি তাঁদের। সাজা ঘোষণার পরেও তিলোত্তমার বাবা বলেছেন, ‘আরও অনেকে যুক্ত রয়েছে। সবাই শাস্তি পাবে। তার জন্য যতদূর পর্যন্ত লড়তে হয় লড়ব।’
তিলোত্তমার বাবার সুরে সুর মিলিয়েছে রাজ্যবাসীও। সঞ্জয় একা নয়। নেপথ্যে বড় ষড়যন্ত্র থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছে অনেকেই। ধোঁয়াশা থেকেই গেছে ঠিক কী ঘটেছিল সেই রাতে তা নিয়ে। সঞ্জয় কি একা দোষী নাকি নেপথ্যে রয়েছে আরও অনেকে তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। এর উত্তর এখনও অধরা।
এদিকে রাজ্যবাসীর সঙ্গে কার্যত সুর মিলিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্তও। তাঁর ধারনা, ‘সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবের রিপোর্ট দেখে তো অনেক কিছুই মনে হচ্ছে। এমনটাও মনে হচ্ছে, যে অনুসন্ধানকারীরা আদালতের কাছে হয়তো পুরোপুরিভাবে তথ্যগুলি তুলে ধরেনি।’
পাশাপাশি তিনি এও জানান, সঞ্জয় হয়তো একা দোষী নয়। অন্তত সদ্য প্রকাশিত সেই ফরেন্সিক রিপোর্টের পর থেকে সঞ্জয় যে ‘একমাত্র দোষী’ এমনটা নিয়ে অনেক ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে সঞ্জয়ের যাবজ্জীবন সাজার হাত ধরেই কী থেমে গেল আর জি কর? ঠিক তেমনটা নয়। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির মতে, এখানেই শেষ নয়। বরং এখান থেকে শুরু মামলার দ্বিতীয় অধ্যায়।
তাঁর কথায়, ‘যে সব সাক্ষ্য প্রমাণ উঠে এসেছে, এমনকি যাদের নাম জড়িয়ে গিয়েছে, সেই ভিত্তিতে এই বিচার যথাযথ হয়েছে কি না তা নিয়ে পরবর্তী আদালতে আবেদন করা যেতেই পারে। আর যদি সেটাই ঘটে। তবে এখানেই শেষ নয়। বরং এখান থেকেই শুরু বিচারের দ্বিতীয় অধ্যায়ের।’