অন্যদের নাম যাতে না আসে তার জন্য তড়িঘড়ি ফাঁসি দিতে চায় রাজ্য, দাবি সঞ্জয়ের নতুন আইনজীবীর

তিলোত্তমাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়ের হয়ে সওয়াল করতে দেখা যাবে নতুন আইনজীবীকে। সূত্রে খবর, কলকাতা হাইকোর্টে সঞ্জয়ের হয়ে সওয়াল করবেন আইনজীবী যশ জালান। তাঁর হয়ে সওয়ালের পক্ষে ওকালতনামায় সঞ্জয় সই না করলেও হাইকোর্ট তাঁকে সওয়ালের অনুমতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন যশ জালান। এরপরই তিলোত্তমাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্তর হয়ে সওয়ালের আগেই তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, এই মামলায় তিন জনের নাম সামনেই আসেনি। সঙ্গে এও জানিয়েছেন, অন্যদের নাম সামনে এসে গেলে সমস্যা বাড়বে, সেজন্য রাজ্য তড়িঘড়ি সঞ্জয়কে ফাঁসি দিতে চায় বলে তাঁর অভিযোগ।

তিলোত্তমাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে শিয়ালদহ আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেছে রাজ্য। সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবিও জানানো হয়েছে রাজ্যের তরফ থেকে। শিয়ালদহ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে গিয়েছে সিবিআই-ও। তাদের তরফ থেকেও ফাঁসির দাবি জানানো হয়েছে। শনিবার সঞ্জয়ের নতুন আইনজীবী যশ জালান বলেন, ‘নিম্ন আদালতে ট্রায়াল অনেক দ্রুত করা হয়েছে। এই মামলার মধ্যে তিনজন রয়েছেন, যাঁদের ক্রস এক্সামিনেশন করা হয়নি। তাঁদের নামও উল্লেখ করা হয়নি। সেই নামগুলো সামনে আসা দরকার। সঞ্জয় রায়ের জন্য রাজ্যের তরফে ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটি (ডিএলএসএ) নিয়োগ করা হয়। ডিএলএসএ-ও তাঁদের নাম আনতে চায়নি। কারণ, তারা রাজ্যের অধীনস্থ।’

একইসঙ্গে আইনজীবী যশ জালান এও জানান, ‘প্রেসিডেন্সি জেলে ২ বার দেখা করতে গিয়েছি। ওকালতনামায় সই করতে দেয়নি। আমার সামনেই সঞ্জয়কে সাদা কাগজে সই করতে বলে। আমি বাধা দিই। সঞ্জয়কেও বলি, আইনজীবীর সঙ্গে কোনও কথা না বলে সাদা কাগজে সই করবেন না।’ এর পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, ‘প্রাইভেট ডিফেন্স কাউন্সেলকে নিজের পক্ষে দাঁড় করাতে চান সঞ্জয়। কিন্তু, তাঁর উপর চাপ দেওয়া হচ্ছে, যাতে লিগ্যাল এইডের সাহায্য নেওয়া হয়। জেল কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য সরকার তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করছে।’

এদিকে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্যের আবেদনের শুনানি রয়েছে। রাজ্যের মামলা গ্রহণযোগ্য কি না, সেই শুনানি হবে। সেখানে সঞ্জয়ের হয়ে সওয়াল করবেন যশ জালান। তিনি সোমবারের সওয়াল প্রসঙ্গে এও জানান, ‘শিয়ালদহ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়েছে। সেখানে সঞ্জয় রায়কে পার্টি করা হয়। তিনি স্টেস লিগ্যাল এইডের ওকালতনামায় সই করেছেন বলে দাবি জেল কর্তৃপক্ষের। কিন্তু, সঞ্জয় বলছেন, এরকম কোনও ওকালতনামায় সই করেননি। এমনকি, তিনি জানেনও যে তাঁকে ওই আবেদনে পার্টি করা হয়েছে। আদালত আমায় অনুমতি দিয়েছে, ওকালতনামায় সই ছাড়াই সওয়াল করতে পারি।’

এদিকে গত কয়েকদিন ধরে তুমুল চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, রাজ্য সঞ্জয়কে তাড়াতাড়ি ফাঁসি দিতে চায় এই ইস্যুতে। এই প্রসঙ্গে আইনজীবী যশ জালান জানান, ‘এটা অনেক হাই প্রোফাইল বিষয় হয়ে গিয়েছে। রাজ্য চায় না, আসল লোক ভিতরে যাক। রাজ্য চায়, সঞ্জয়কে ফাঁসি দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দিতে। যদি অন্যদের নাম সামনে আসে, অনেক সমস্যা তৈরি হবে।’

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty + 15 =