বাজেট নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিশ্বভারতীর  অর্থনীতির অধ্যাপকদের

আয়কর ছাড় দিলেও নেই বেকারত্ব দূরীকরণের চিন্তা, উৎপাদন বৃদ্ধি নিয়েও তেমন কোনও ঘোষণা নেই শনিবারে পেশ করা কেন্দ্রীয় বাজেটে , এমনটাই মত কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপকদের ৷ সাধারণ মানুষের মধ্যে আবার বাজেট নিয়ে তাঁদের মধ্যে মিলেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ মনে করছেন আয়কর ছাড় দেওয়া প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কারও মতে বেকারত্ব কমাতে উদ্যোগ নেওয়া উচিত ছিল সরকারের।

বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপকদের মতে এই বাজেটে মহাত্মা গান্ধি জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থানে (এমজিএনআরইজিএ) বরাদ্দ বাড়ানো হয়নি ৷ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষ খরচ করতে পারছেন না ৷ সেদিকেও নজর দেওয়া হয়নি তৃতীয় মোদি সরকারের বাজেটে ৷ ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ বার্ষিক ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের ক্ষেত্রে কর ছাড়ের ঘোষণা করেছেন ৷

কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়াঃ

এই বাজেট প্রসঙ্গে বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সৌম চক্রবর্তী বলেন, ‘এই মুহূর্তে ভারতীয় অর্থনীতির একটা বড় সমস্যা বেকারত্ব ৷ কোভিডের আগে বা পরে মানুষ একেবারে ছোট কৃষিক্ষেত্রে কাজের জন্য ঢুকে পড়ছে ৷ প্রথমে মনে হতে পারে ভালো ৷ কিন্তু, তা নয় ৷ বাধ্য হয়ে তাঁরা ছোটখাটো কাজগুলি করছেন ৷ এই পরিপ্রেক্ষিতে বাজেটকে দেখতে হবে ৷ সেখানে আয় ভীষণ কম ৷ এই বাজেটে দেখা যাচ্ছে আয়করে বিপুল ছাড় দেওয়া হয়েছে ৷ এতে মধ্যবিত্তদের একটা অংশ ভাবছেন খুবই ভালো ৷ চাকুরিজীবীদের সুবিধা ৷ চাহিদাও বাড়তে পারে ৷ কিন্তু চাহিদা বাড়ানোর একটি বড় জায়গা হচ্ছে গ্রামীণ চাহিদা ৷ এই চাহিদা বাড়ানোর একটা উৎস হতে পারত মহাত্মা গান্ধি জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থানে বরাদ্দ ৷ গত বছর এই খাতে বরাদ্দ ছিল ৮৬ হাজার কোটি টাকা ৷ এবছরও তাই ৷ এই খাতে টাকা বাড়ালে গ্রামীণ ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশ হত ৷ বেকারত্ব কমত ৷ এই মুহূর্তে ভারতে সাড়ে ৩ কোটি লোক বেকার ৷’

বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের অপর এক অধ্যাপক অপূর্ব কুমার চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘বাজেট হল অর্থনীতির আয়না ৷ কোনও একটা দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে তা তুলে ধরে এই বাজেট। এখানে লক্ষ্য রাখতে হবে, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যেভাবে জিডিপি বাড়ছে, সেইমতো ভারতে জিডিপি বাড়ছে না ৷ কোভিড পরিস্থিতি এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি আমরা ৷ ৫ শতাংশের আশপাশে আমাদের জাতীয় আয় বাড়ছে ৷ এই জিডিপি না বাড়ার একটা কারণ হল দেশে উৎপাদন বাড়ছে না ৷ জনসাধারণ খরচ করছে না ৷ যা আয় করছে, তা খরচ করছে না বা করতে পারছে না ৷ অন্যদিকে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে ৷ অথচ উৎপাদন বাড়ছে না ৷ এটা মুদ্রাস্ফীতির জন্য ৷ তবে এবারের বাজেটে আয়কর ছাড় দিয়ে মধ্যবিত্ত শ্রেণির উপকার করেছে ৷ এদিক থেকে দেখতে গেলে জনমুখী বাজেট ৷’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 3 =