বেলেঘাটার ঘটনায় আতঙ্কিত তৃণমূল কর্মীর বৃদ্ধা মা

শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে এবার উত্তপ্ত খাস কলকাতার বেলেঘাটা। তৃণমূল কর্মীকে বাড়িতে না পেয়ে চপার দিয়ে কোপানো হল তাঁর বৃদ্ধা মা এবং ভাইকে, এমনটাই অভিযোগ। এই ঘটনার পরই স্থানীয় প্রোমোটারের আশ্রিত দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানায় আক্রান্ত পরিবার। এই ঘটনার পর তৃণমূল কর্মী বাপি দাসের ভাই সুময় দাস ও মা শিবানী দাসের আতঙ্ক কাটছে না। এমনকী মৃত্যুভয়ে কেঁদে ফেলেন বৃদ্ধা মা। এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত গ্রেফতার হলেও ভয় কাটছে না পরিবারের। বাপি দাসের মা শিবানি দাস সোমবারের সন্ধ্যার সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলে বলেন, ‘হঠাৎ কথা বলতে বলতে গলায় কোপ মারতে এল। থানা থেকে ছেড়ে দিলে ও আবার মারতে আসবে। এইভাবেই মরে যাব।’

স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার হামলার শিকার হন ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মী বাপি দাসের মা শিবানী দাস ও ভাই সুময় দাস। বাপি দাসের অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে গোষ্ঠী অলোক দাসের ঘনিষ্ঠ তিনি। তাই, দলের বিরুদ্ধ অপর যে গোষ্ঠী রয়েছে তারাই তাঁর পরিবারের উপর হামলা চালিয়েছে। একইসঙ্গে তিনি এও জানান, বিধায়ক ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার রাজু নস্কর ও তাঁর দলবল তাঁকে দীর্ঘদিন ধরে বাড়ি খালি করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছিল। ভয় দেখাচ্ছিল। কিন্তু, ভয় না পেয়ে তিনি প্রতিবাদ করেন।

বাপি দাসের ভাই সুময় দাস বলেন, এদিন দুপুরে তাঁর দাদা বাড়িতে ছিলেন না। সেইসময় রাজু নস্কর আশ্রিত দুষ্কৃতী সৌরভ দাস রাসমণি বাজার এলাকায় তাঁদের বাড়িতে চপার নিয়ে চড়াও হয়। তাঁর দাদা কোথায় জানতে চায়। সুময় তখন সৌরভ দাসকে জানান, কী বলার আছে তাঁকে বলতে। তখনই চপার বের করে আমার ও মায়ের উপর হামলা চালায়। এলোপাথাড়ি চপার চালাতে থাকে। তাঁর হাতে, কানে এবং তাঁর মায়ের হাতে চোট লেগেছে বলে জানান সুময়। বেলেঘাটা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা।

বাপি দাসের পরিবারের অভিযোগ অবশ্য খারিজ করে দেন স্থানীয় বিধায়ক ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার রাজু নস্কর। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। এটা ওদের পারিবারিক ব্যাপার বলেই দাবি করছেন প্রোমোটার রাজু।

উল্লেখ্য, বাপি দাস ও রাজু নস্কর- দুজনেই বিধায়ক পরেশ পালের সঙ্গে কাজ করতেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে বাপি দাসের দাবি, সম্প্রতি রাজু এমন কিছু কারবারে জড়িয়ে পড়েন, যার জন্য তাঁদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। তবে এই হামলার পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 + eighteen =