হিন্দু ধর্মালম্বীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং পবিত্র ধর্মস্থান পুরীর জগন্নাথ মন্দির। এই মন্দির নিয়ে নানা অলৌকিক কাহিনী যেমন প্রচলিত রয়েছে, তেমনই মন্দিরের কোষাগারে কত সম্পত্তি রয়েছে তা নিয়েও জল্পনার অন্ত নেই। পুরী মন্দিরে কত টাকা রয়েছে, তা নিয়ে সম্প্রতি ফের একবার প্রশ্ন ওঠে ওড়িশা হাইকোর্টে। এই প্রসঙ্গে একটা তথ্য দিয়ে রাখা শ্রেয়, ১৯৭৮ সাল থেকে মন্দিরে থাকা অলঙ্কারের কোনও তালিকা তৈরি করা হয়নি। তাই দেবতার সম্পত্তি হিসেবে থাকা হিরে, সোনা ও রূপোর অলঙ্কারের মূল্য কত তা নিয়ে ৪৫ বছর ধরে তৈরি হয়েছে এক জল্পনা।
সম্প্রতি ৩০ জুন ওড়িশা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। যেখানে পুরীর জগন্নাথ দেবের এই মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডার খুলে ভিতরের জিনিসগুলির একটি তালিকা তৈরি করার দাবি জানানো হয়। পিটিশন দাখিলের পর হলফনামা দাখিলের জন্য বুধবার মন্দির প্রশাসনকে নোটিশও জারি করা হয়েছে বলে সূত্রে খবর।
শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসনের (এসজেটিএ) প্রধান প্রশাসক রঞ্জন কুমার দাস এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, তাঁরা এই নোটিশটি হাতে পাওয়ার পর তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানাবেন। এদিকে পুরীর এই জগন্নাথ মন্দির আইন ১৯৫৫- তে বলা হয়েছে যে প্রতি তিন বছরে একবার রত্ন ভাণ্ডারের তালিকা তৈরি করতে হবে। তবে দীর্ঘদিন ধরেই এমনটা করা হয়নি।
মন্দিরের কোষাগারে উপস্থিত জিনিসের তালিকা তৈরি করা হয়েছিল ১৯২৬ সালে। এর ৫২ বছর পর অর্থাৎ ১৯৭৮ সালে আরও একবার এই তালিকা তৈরি করা হয়। তবে দাবি করা হয়, ১৯৭৮ সালের এই তালিকায় গয়নার হিসেব ছিল না। এরপর ২০১৮ সালে রাজ্য সরকার তদন্তের জন্য রত্ন ভাণ্ডার খোলার প্রস্তুতি নিলেও সেই সময়ের মধ্যে অফিসাররা ঘরের চাবি না পাওয়ায় সে কাজ সম্পন্ন হয়নি। ফলে পুরো বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে।
অনুমান করা হয়, প্রতি বছর সাড়ে ৩ লাখের বেশি ভক্ত পুরীর মন্দিরে পৌঁছন। নানা জল্পনায় মনে করা হয়, মন্দিরের আয় প্রতি বছর প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। এরসঙ্গে মন্দির প্রতি বছর ১.৭২ কোটি টাকারও বেশি অনুদান পায়। এছাড়া, সম্প্রতি আরও একটি তথ্য সামনে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, জগন্নাথ মন্দিরের ব্যাঙ্ক ডিপোজিটের পরিমাণ প্রায় ৬০০ কোটি টাকা।