মুখ্যমন্ত্রী নিজের দেওয়া কথা রাখেন নাঃ শুভেন্দু

২০২৩ সালের মে মাস। ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল গ্রাম। বেআইনি বাজি বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল ১১ জন গ্রামবাসীর। এরপর গত শুক্রবার সেই স্মৃতি উসকে দেয় নদিয়ার কল্যাণীতে বাজি বিস্ফোরণে চারজনের মৃত্যুর ঘটনা।

মঙ্গলবার কল্যাণীর এই বাজি কারখানার বিস্ফোরণে এন আই এ তদন্তের দাবি জানান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন নদীয়ার কল্যাণীর রথতলা বাজি বিস্ফোরণ কাণ্ডে ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায়, হরিণ ঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার, চাকদার বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ সহ একাধিক বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দু লক্ষ এক হাজার টাকা দেন মৃতদের পরিবারকে। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, রাজ্য সরকারের উচিত ছিল প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা মৃতের পরিবার পিছু আর্থিক সহযোগিতা করা।

এরপর এ বিষয়েই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব তথা মুখ্যমন্ত্রীর বর্তমান মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

শুভেন্দু বলেন, ‘এগরার বিস্ফোরণের পর মুখ্যমন্ত্রী এবং তৎকালীন মুখ্যসচিব বাজি কারখানা নিয়ে অনেক প্রতিশ্রুতির কথা শুনিয়েছিলেন। আসলে মানুষকে বোকা বানানোর জন্য যে সে সময় ওই সব প্রতিশ্রুতিগুলি দেওয়া হয়েছিল, তা তো কল্যাণীর ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। স্পষ্ট হল, মুখ্যমন্ত্রী নিজের দেওয়া কথা রাখেন না।’

একই সঙ্গে বিরোধী দলনেতা এ প্রসঙ্গে এ প্রশ্নও তোলেন, বাজি কারখানার বিরোধিতা কেউ করছে না। কিন্তু এটা যে বাজি কারখানা সেটা কে প্রমাণ করবে? রানাঘাটের পুলিশ সুপার নিজে বলছেন, কল্যাণীর ওই বাজি কারখানার কোনও লাইসেন্স ছিল না।

বিরোধী দলনেতা বলেন, আসলে বাজি কারখানার ক্ষেত্রে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশিকা রয়েছে। আদালতের তরফেও কিছু গাইড লাইন বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সেগুলি মেনে বাজি কারখানা করলে তো কারও আপত্তি থাকার কথা নয়। কারণ, এই শিল্পের সঙ্গেও লক্ষ লক্ষ মানুষ জড়িয়ে। কিন্তু সরকার তাদের জন্য ন্যূনতম সুরক্ষার ব্যবস্থা করছে না বলেই বারে বারে এমন বেআইনি বাজি কারখানা গজিয়ে উঠছে আর বিস্ফোরণে প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।

কল্যাণীর বিস্ফোরণ কাণ্ডে ইতিমধ্যে কারখানার মালিক খোকন বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খোকনের সঙ্গে তাঁদের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করতে শুরু করেছেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা। যদিও এ ব্যাপারে শুভেন্দুর চ্যালেঞ্জ, ‘খোকন বিশ্বাস তৃণমূলের লোক বলেই এভাবে বেআইনি বাজির ব্যবসা চালু করতে পেরেছিল। এখন ফেঁসে গিয়ে ওর দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন নেতারা। আপনার বলুন না, খোকনের সঙ্গে কতজন তৃণমূল নেতার ছবি দেখতে চান? আমি দেব!’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven − two =