জামতাড়া গ্যাংয়ের ৪৬ জন গ্রেফতার, জানালেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ

সাইবার সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি, সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ করতে ‘সাইবার শক্তি’ অভিযান চালাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। আর এই অভিযান গত ১৫ দিনে তদন্ত চালিয়ে ঝাড়খণ্ড সংলগ্ন এলাকা থেকে ৪৬ জন সাইবার প্রতারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলন করে একথা জানান  এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার।

রাজ্য পুলিশ সূত্রে খবর, ‘সাইবার শক্তি’ নামে শুরু হয়েছিল তল্লাশি অভিযান। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে মিলল সাফল্য। তবে এখনই শেষ নয়। বরং আরও গ্রেফতারি যে হতে পারে, সেই ইঙ্গিতটাও বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক থেকে দিয়ে রাখলেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার।

এদিন তিনি বলেন, ‘ধৃতরা জামতাড়া গ্যাং-এর সঙ্গে যুক্ত। বহু বহু অত্যাধনিক সরঞ্জাম পাওয়া গিয়েছে তাদের কাছে। জামতাড়া সংলগ্ন এলাকাতেই বেশিরভাই সাইবার অপরাধের ঘটনাগুলি ঘটেছে। পুলিশকর্তা সুপ্রতিম সরকার আরও জানান, ৯০ শতাংশ মামলার কিনারা করা হয়েছে। ধৃতরা কোন নির্দিষ্ট দলের সদস্য কিনা তা নিয়ে তদন্ত চলছে। সঙ্গে এও জানান, শতাধিক ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড-সহ একাধিক জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। রাজ্যে সাইবার প্রতারণা রুখতে চলছে অপারেশন সাইবার শক্তি। ইতিমধ্যে ৪৬ জনকে গ্রেফতার হলেও এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে আরও অনেকেই জড়িত আছে বলেই খবর।’

এর পাশাপাশি সাংবাদিক বৈঠকে এডিজি দক্ষিণবঙ্গ জানান, বঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলকেই নিজেদের ঘাঁটি বানাচ্ছে সাইবার প্রতারকরা। আর সেখান থেকেই চলছে কোটি কোটি টাকার প্রতারণা চক্র। তাঁর কথায়, ‘জামতাড়া থেকে বঙ্গে ঝাড়খণ্ড সংলগ্ন জেলাগুলিতে এরা আসছে। তারপর ছোট ছোট গ্যাং করে ফাঁদ পাতছে প্রতারণার। কাজ মিটলে, আবার নিজে ভূমেই ফিরে যাচ্ছে এরা।’

তাঁর আরও দাবি, ‘কখনও দিন পনেরো, কিংবা কখনও দিন সাতেকের জন্য জামতাড়া থেকে বঙ্গে এসে নির্দিষ্ট এলাকায় প্রথমে বাড়ি ভাড়া নিচ্ছে তারা। তারপর সেখান থেকে প্রতারণার কাজ চালাচ্ছে তারা।’

প্রসঙ্গত, বাংলাজুড়ে সাইবার ক্রাইম বাড়ছে। তাও আবার নিত্যনতুন ফাঁদ পেতে। যার জেরে বেশ চাপে পড়ে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিশ্বাস করে ঠকতে হচ্ছে। কৌতূহল নিয়ে লিঙ্কে ক্লিক করে সর্বস্বান্ত হতে হচ্ছে। আবার ওটিপি পাঠিয়েও জালিয়াতি করা হচ্ছে। এই নিয়ে এখন বেশ আতঙ্কে আছেন সাধারণ মানুষ। জালিয়াতদের খপ্পরে পড়ে টাকা খোয়ানোর পর সাধারণ মানুষ কী করবেন বুঝতে পারছেন না। তাঁরা কোথায় অভিযোগ জানাবেন সেটা নিয়েও দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। এই সমস্যার সমাধান করতে এবার রাজ্য পুলিশের সাইবার ক্রাইম উইং (সিসিইউ) এবার আলাদা থানা তৈরি করতে চাইছে। তাই এই বিষয়ে চিঠি লিখে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে নবান্নে। যা নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের খবর। এদিকে কলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজারে সাইবার ক্রাইম বিভাগ বা সেল আছে। প্রত্যেকটি জেলায় এবং পুলিশ কমিশনারেটে সাইবার সাইবার ক্রাইম থানা আছে। আর এখানে এসে প্রতারিত মানুষ অভিযোগ জানাতেই পারেন।

উল্লেখ্য, গত কয়েকমাস ধরে রাজ্যে সাইবার প্রতারণা যে হুড়মুড়িয়ে বেড়েছে সেই নিয়ে কোনও মতবিরোধ দেখাননি খোদ এডিজি দক্ষিণবঙ্গও। সম্প্রতি, শ’য়ে শ’য়ে পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা নিয়ে তৈরি হয়েছিল ধন্দ। গোটা বিষয়কে নিয়ন্ত্রণে আনতে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three + 1 =

preload imagepreload image