‘ফাঁকা কলসি’ বলে কেন্দ্রীয় বাজেটের সমালোচনা অভিষেকের

কেন্দ্রীয় বাজেটের তীব্র সমালোচনা করলেন তৃণমূলের সর্বভারীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, গোটাটাই ভাঁওতা। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে, ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করলে, বছরে কোনও ইনকাম ট্যাক্স লাগবে না। বছরে ১২ লক্ষ টাকা আয় মানে, মাসে তাঁর বেতন ১ লক্ষ টাকা। যে মাসে ১ লক্ষ টাকা আয় করে, তাঁকে তো জিনিসপত্র কিনতে হয়, তাঁকে চা খেতে দুধ-চিনি-চা পাতা সবই কিনতে হয়। জল ছাড়া সবেতেই জিএসটি। তাঁকে জিএসটি বাবদে ৯৮ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। এরপরও রয়েছে টোল ট্যাক্স, সিকিউরিটি ট্রানজাকশন ট্যাক্স রয়েছে, সার্চ চার্জ। মুদ্রাস্ফীতি যেভাবে বাড়ছে, বছরে ৬ শতাংশ করে বাড়লে, তিন বছরে ১৮ শতাংশ।

একইসঙ্গে অভিষেক জানান, বাজেট পুরো ফাঁকা কলসির মতো। ফাঁকা কলসির আওয়াজ বেশি। সহ্গে প্রশ্ন তোলেন, বাংলার জন্য কী বরাদ্দ হয়েছে তা নিয়েও। এই প্রসঙ্গে অভিষেক জানান, ‘আমি যদি রাজনৈতিকভাবে দেখি, বিজেপির ১২ জন সাংসদ রয়েছে বাংলায়, বিহারেও ১২ জন সাংসদ রয়েছেন। বিহারকে এত কোটি কোটি বরাদ্দ, বাংলাকে কেন বঞ্চনা? বাংলা মাথা নত করেনি বলে?’ এরই রেশ ধরে বিজেপির রাজ্য সবাপতি তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারকে তাঁর প্রশ্ন, যে ৪৪ হাজার কোটি টাকা পঞ্চায়েত দফতরকে বরাদ্দ করেছে, এর মধ্যে কি জাত থেকে ধর্ম দেখে বরাদ্দ করা হয়েছে কি না তা নিয়ে। কারণ, মাইনোরিটি দফতরের ক্ষেত্রে বিজেপি বাজেট ১৫৭৫ কোটি টাকা থেকে ৬৮২ কোটি টাকা হয়েছে। আর এখানেই অভিষেকের প্রশ্ন,’কেন? ৫৬ শতাংশ কমেছে কেন? মাইনোরিটিরা ভোট দেয় না বলে?’ একইসঙ্গে এও জানান, ‘জাতির রাজনীতি করে ওরা মুখ থুবড়ে পড়েছে। সুকান্ত মজুমদারের উচিত আত্মবিশ্লেষণ করা। আর পাঁচ হাজার কম ভোট পেলে, বালুরঘাটে বিজেপি হেরে যেত। পরেরবার আসন ধরে রাখতে পারবে না।’

এরই রেশ ধরে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন,’আমি মনে করি, একাই লড়ো, একসঙ্গে লড়ো, মানুষ যদি আপনার সঙ্গে থাকে, তাহলে জিতব। যেমন উদাহরণ বাংলা। আমরা তো এখানে একাই লড়েছি, একাই জিতেছি। বিজেপির একটা বিশেষ ব্যাপার হল, বিজেপি মানুষকে ভুল বোঝাতে সিদ্ধহস্ত। এখন বিজেপি দিল্লিবাসীকে বুঝিয়েছে, কেজরিওয়াল ২০১২-১৩ সাল থেকে তো ছিল। কিন্তু কিছু করেনি। আম আদমি পার্টির লোক, কিছুটা অসফল থেকেছে, কারণ ভুয়ো প্রচারকে কাউন্টার করতে পারিনি। তারও কারণ, একটা নির্বাচিত সরকারকে কাজ করতেই দেওয়া হয়নি।২০২৩ সালে বিজেপি অর্ডিন্যান্স করে প্রদেশ সরকার ও দিল্লি সরকারের সমস্ত ক্ষমতা নিয়ে নিয়েছে। এটাই কেজরিওয়ালের উচিত ছিল মানুষকে বোঝানোর। এই চেষ্টা বাংলাতেও হয়েছিল। বিজেপি রটিয়েছিল, কেন্দ্র থেকে টাকা পাঠানো হচ্ছে, কিন্তু তৃণমূল সরকার আপনাদের দিচ্ছে না। আমরা বলেছিলাম, চার বছরে কত টাকা পাঠানো হয়েছে, তার তালিকা প্রকাশ করতে। মিথ্যা তো সামনে চলেই আসে। কেজরিওয়ালের সঙ্গেও এটাই হয়েছে। একজন মুখ্যমন্ত্রীকে জেলে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। ক্যাবিনেটের মন্ত্রীদের তিন চার মন্ত্রীকে জেলে ঢুকিয়েছেন, তারপর বলছেন, সরকার কাজ করছে না? আমার মনে হয়, জোট হয়ে লড়লে, নিশ্চয়ই সাফল্য আসত।’ এর পাশাপাশি অভিষেক স্পষ্ট বার্তা দেন, ছাব্বিশেও একাই লড়বে তৃণমূল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × three =