প্রয়াত কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়। শনিবার সকালে এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন ‘আমি বাংলায় গান গাই’-এর মতো স্রষ্ঠা। বেশ কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার খবর পেয়েই খোঁজ নেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সন্ধ্য়ায় নিজেই যান এসএসকেএম হাসপাতালে। প্রবীণ শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোশাল মিডিয়া পোস্টে তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানালেন তিনি। লিখলেন, ‘প্রতুলদার মৃত্যু বাংলা গানের জগতে অপূরণীয় ক্ষতি। যতদিন বাংলা গান থাকবে, ‘আমি বাংলায় গান গাই’ বাঙালির মুখে মুখে ঘুরবে।’ এর পাশাপাশি ফেসবুক পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতুলবাবুর সঙ্গে তাঁর শেষ সাক্ষাতের মুহূর্ত স্মরণ করেছেন। লিখেছেন, ‘কয়েকদিন আগেই হাসপাতালে গিয়ে আমি ওনার সঙ্গে দেখা করে এসেছি। প্রতুলদার মৃত্যু বাংলা গানের জগতে অপূরণীয় ক্ষতি। আমি গর্বিত আমাদের সরকার তাঁকে যোগ্য সম্মান জানাতে পেরেছিল।’
জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তখন আচমকা তাঁর নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হওয়ার খবর মেলে, পরে স্নায়ু ও নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞরা তাঁকে পরীক্ষাও করেছিলেন।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেও হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে চিকিৎসকদের ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গেয়ে শোনান প্রবীণ গায়ক। কিন্তু সপ্তাহ খানেক আগে তাঁর আচমকাই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। দেখা যায়, হার্ট অ্যাটাক হয়েছে গায়কের। তড়িঘড়ি কার্ডিওলজি বিভাগে স্থানান্তর করা হয় তাঁকে। সেখানেই ধরা পড়ে, ফুসফুসেও প্রবল সংক্রমণ। ফলে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে দ্রুত। সঙ্গে ছিল অ্যান্টিবায়োটিক এলার্জি সংক্রমণ ও নিউমোনিয়া। পরিস্থিতি ক্রমশই জটিল হয়ে ওঠে ক্রমশ। এরপরই মালটি অর্গান ফেইলিওর আর তারপর কার্ডিয়াক আরেস্টে মৃত্যু হয় প্রতুলবাবুর। ফলে হাজারো চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হল না।
বাংলার কিংবদন্তি এই শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের ১৯৪২ সালের ২৫ জুন অবিভক্ত বাংলার বরিশালে জন্ম হয়। তাঁর অ্যালবামগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘পাথরে পাথরে নাচে আগুন’ (১৯৮৮), ‘যেতে হবে’ (১৯৯৪), ‘ওঠো হে’ (১৯৯৪), ‘কুট্টুস কাট্টুস’ (১৯৯৭), ‘স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’ (২০০০), ‘তোমাকে দেখেছিলাম’ (২০০০), ‘স্বপনপুরে’ (২০০২), ‘অনেক নতুন বন্ধু হোক’ (২০০৪), ‘হযবরল’ (২০০৪), ‘দুই কানুর উপাখ্যান’ (২০০৫), ‘আঁধার নামে’ (২০০৭)। আর ২০১১ মুক্তি পায় তাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যালবাম আমি বাংলায় গান গাই।