কলকাতায় ফের মাথা চাড়া দিচ্ছে দুষ্কৃতি তাণ্ডব। বিডনস্ট্রিট, দমদমের পর এবার একই কায়দায় লুঠপাট চলল টালিগঞ্জে। সোমবার সন্ধেয় এই দুষ্কৃতি তাণ্ডবের ঘটনা ঘটে ম্যুর এভিনিউ এলাকার দাসানি স্টুডিওর পাশের একটি ফ্ল্যাটে। ভর সন্ধ্যায় এসে লুঠপাট চালাল ডাকাত দল। নিয়ে গেল সোনা-গয়না, টাকাকড়ি। প্রতিদিনের মতো ওই মহিলার স্বামী কাজে বেরিয়ে যাওয়ার পরই এই একাকী থাকার সময়কেই টার্গেট করে দুষ্কৃতিরা।
সূত্রে খবর, সারাদিন পর বিকাল নাগাদ নিজের কিছু একান্ত কাজ নিয়ে নিজেও এলাকায় বেরিয়ে ছিলেন সোনালি বিশ্বাস। এরপর সন্ধ্যায় ফ্ল্যাটে ফেরেন তিনি। কিন্তু ঠাওর করে উঠতে পারেননি বিপত্তি লুকিয়ে সেখানেই। তাঁর অভিযোগ, দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই পিছন থেকে এসে তাঁকে ধাক্কা মারে দুই আততায়ী। যার জেরে মাটিতে আছাড় খেয়ে পড়েন তিনি। দাক্কার প্রতিঘাতে সংজ্ঞাও হারান। এরপরই তাঁকে ছুরির ডগায় রেখে গোটা বাড়ি লুঠপাট চালাত ডাকাতরা। হুমকিও দেয় প্রাণনাশের। পাছে মহিলা তাদের বেরনোর সঙ্গে সঙ্গেই পাড়া-প্রতিবেশীদের ডেকে বসেন। তাই সেই বিপদ এড়াতে তাণ্ডব শেষ হলে মহিলার মুখে কাপড় ঢুকিয়ে, হাত-পা বেঁধে তাঁকে সেই অবস্থাতেই ফেলে রেখে চলে যায় ডাকাতদল।
এই ঘটনার ঘণ্টাখানেক পরই ফেরেন সোনালিদেবীর স্বামী। ফ্ল্যাটে ঢুকেই দেখেন ঘরের দরজা খোলা। ঘরের মধ্যে সব কিছুই ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে রাখা। আর তারই মাঝে মাটিতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে রয়েছেন স্ত্রী। পরিবেশ-পরিস্থিতি দেখে পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যায় তার। সঙ্গে স্ত্রীকে সেই বাঁধন থেকে মুক্ত করেন তিনি।
ইতিমধ্যে গোটা ঘটনায় এলাকায় ছড়িয়ে আতঙ্ক। স্থানীয় রিজেন্ট পার্ক এলাকায় দায়ের হয়েছে লিখিত অভিযোগ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে যেখানে গোটা ফ্ল্যাট সিসিটিভি নিরাপত্তায় মোড়া, সেখানে দাঁড়িয়ে কীভাবেই বা ভর সন্ধ্যায় এমন তাণ্ডব চালাল দুষ্কৃতীরা তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট দশ ভরি সোনা চুরি করে চম্পট দিয়েছে আততায়ীরা। কিন্তু এত পরিমাণ সোনাই বা কেন ঘরে মজুত করে রেখেছিলেন মহিলা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, সামনেই নাকি ছেলের বিয়ে, সেই কারণেই সম্ভবত এত পরিমাণ বাড়িতে মজুত করেছিল তারা। সঙ্গে এও মনে করা হচ্ছে, বিপুল সোনা থাকতে পারে এই ফ্ল্যাটে তা দুষ্কৃতিরা জানতো কি না তা নিয়েও।