বর্জ্যের পুনর্ব্যবহারে ধাপায় জৈব গ্যাস-সহ আরও নানা জিনিস তৈরি শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা। আর তা তৈরি হবে বর্জ্য থেকেই। তবে তার জন্য যেটা সবার আগে দরকার তা হল এই বর্জ্যের পৃথকীকরণ। উৎস থেকে অর্থাৎ বাড়ি থেকে সংগ্রহের সময়েই বর্জ্য পৃথকীকরণ বিস্তর সুবিধা হয়। কিন্তু এই বর্জ্য পদর্থের পৃথকীকরণ না করা হলে জৈব গ্যাস-সহ আরও নানান জিনিস তৈরির প্রকল্পে সমস্যা হচ্ছে। সেই কারণেই বাড়ি-বাড়ি পচনশীল এবং অপচনশীল বর্জ্য সংগ্রহের জন্যে নীল-সবুজ বালতিও দেওয়া শুরু হয় শহরে। এরপরও হেলদোল নেই শহরের বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে। একটি বালতি রেখে দিয়ে আর একটি বালতি ব্যবহার করছেন।
এবার আমজনতার এই প্রবণতা ঠেকাতে বিশেষ টিম তৈরি করে প্রচারে নামছে পুরসভা। সেই সঙ্গে কেন বর্জ্য পৃথকীকরণ জরুরি, তা মানুষকে বোঝানোর জন্যে এলাকাভিত্তিক প্রচার চালাতে কাউন্সিলারদেরও চিঠি দিয়েছেন পুর-কমিশনার বিনোদ কুমার। কলকাতা পুরসভার তরফ থেকে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে যে, শহরজুড়ে জঞ্জাল পৃথকীকরণে তৈরি পৃথক টিমের সদস্যরা বাড়ি-বাড়ি ঘুরে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলবেন। পচনশীল এবং অপচনশীল বর্জ্যের জন্যে বরাদ্দ দু’টি বালতি তাঁরা পেয়েছেন কিনা, কোন বালতিতে কী ধরনের জঞ্জাল ফেলা উচিত, সে বিষয়ে আমজনতাকে বোঝাবেন পুরকর্মীরা। তিন মাস ধরে চলবে এই কর্মসূচি।
এর পর বাসিন্দারা পুরো বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন কিনা তা জানতে চলবে সারপ্রাইজ ভিজিট। শহরের ২৭টি ওয়ার্ডে বছর দুয়েক আগেই নীল-সবুজ বালতি বিলি করেছে পুরসভা। বাকি ১২৭টি ওয়ার্ডে দু’টি করে বালতি দেওয়া শুরু হয়েছে গত নভেম্বর থেকে।
এদিকে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, শুক্রবার পর্যন্ত ওই ১২৭টি ওয়ার্ড মিলিয়ে ৮৮ শতাংশ বাড়িতে দেওয়া গিয়েছে নীল-সবুজ বালতি। কিন্তু প্রতিদিন যাঁরা জঞ্জাল সংগ্রহ করতে যান, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে পুর-আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, অনেক বাসিন্দাই একটি বালতিতেই সব জঞ্জাল মিশিয়ে দিচ্ছেন।
এই প্রসঙ্গে জঞ্জাল সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘কাউন্সিলারদের পাশাপাশি অফিসারদেরও এ ক্ষেত্রে কাজে লাগানো হচ্ছে। কারণ, আমরা চাইছি, উৎসেই যেন জঞ্জাল পৃথকীকরণ হয়। কারণ, সেটা না হলে ধাপায় জৈব গ্যাস প্রকল্পে চাহিদা অনুযায়ী জঞ্জাল সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। আশা রাখি, খুব শীঘ্রই সমস্যা মিটবে।’