ট্যাংরা কাণ্ডে উঠে আসছে নানা তথ্য, স্পষ্ট হবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পরই, জানাচ্ছে পুলিশ

ট্যাংরার ঘটনায় । সময় যত এগোচ্ছে ততই এই ঘটনায় উঠে আসছে নয়া মোড়। এদিকে এখনও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন প্রণয় দে আর প্রসূন দে। সঙ্গে ভর্তি রয়েছে প্রসূনের ছেলেও। লালবাজারের তদন্তকারী আধিকারিকদের অনুমান, প্রণয় ও প্রসূনের স্ত্রীদের নিথর মৃত্যু নিশ্চিত করতেই ছুরি দিয়ে হাত ও গলা কাটা হয়ে থাকতে পারে। এরপর দুই ভাই বাড়ি থেকে বেরনোর আগে বাড়িতে রেখে গিয়েছিল ফোন। আর এখানেই প্রশ্ন, তাহলে তাদের পালানোর উদ্দেশ্য ছিল কি না তা নিয়েই।

সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে জানা গিয়েছে, রাত বারোটা পঞ্চাশ নাগাদ দুই ভাই বাড়ি থেকে বের হন। তারপর অভিষিক্তার কাছে গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানতে পেরেছে, বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বাড়িতে মোবাইল ফোন রেখে গিয়েছিলেন প্রসূন ও প্রণয়।

এদিকে দুই ভাই ও তাঁদের স্ত্রীদের চারটি ফোন বাজেয়াপ্ত পুলিশের। চারটি ফোন চালু অবস্থা থেকেই উদ্ধার হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে চ্যাট হিস্ট্রি ও কল ডিটেইলস। এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, হাসপাতালে কথা বলার মত অবস্থায় থাকা এক ভাইয়ের বয়ান অনুযায়ী, রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গাড়িতে আশেপাশেই তারা ঘুরপাক খাচ্ছিল। একটি জায়গায় তাঁরা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর রাত দুটো নাগাদ বাইপাসের দিকে এগোয়। কোন জায়গায় তাঁরা বেশি সময় অপেক্ষা করেছে তা বলতে পারেনি। তাঁদের গতিবিধি জানতে ট্রাফিক পুলিসের থেকে সিসিটিভি ফুটেজ চেয়েছে লালবাজার। আর বাড়ি থেকে বেরিয়ে দীর্ঘক্ষণ কোন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকার কারণ ও ভাবাচ্ছে পুলিশকে। প্রশ্ন উঠেছে, তাঁরা এই সময় সিদ্ধান্ত হীনতায় ভুগছিলেন না কারো জন্য অপেক্ষা করছিলেন তা নিয়েও।

এর পাশাপাশি তিনি এও জানান, মঙ্গলবার রাতে বাড়ি থেকে বেরনোর আগে ট্যাংরা অতুল সুর লেনের বাড়ির ছাদে উঠেছিলেন তাঁরা৷ দুই ভাইয়ের সঙ্গে প্রণয়ের ১৪ বছর বয়সি ছেলেও ছিল৷ দুই ভাই জানিয়েছেন, তাঁদের স্ত্রী এবং প্রসূনের কিশোরী কন্যার মৃত্যুর পর ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে প্রথমে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তাঁরা৷ কিন্তু সেই চেষ্টা সফল না হওয়ায় রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনজন ৷

এ দিকে, বিছানায় দুই বধূর রক্তাক্ত দেহ থাকলেও ফিনকি দিয়ে রক্ত ছিটকে যাওয়ার চিহ্ন পায়নি পুলিশ। কাটা অংশের পাশে বিছানা রক্তে ভিজে গিয়েছিল। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, যদি তাঁরা সজ্ঞানে আত্মঘাতী হয়ে থাকেন, তাহলে রক্ত ফিনকি দিয়ে ছিটকে যাওয়ার কথা। সেই সূত্রেই খুনের তত্ত্ব আরও জোরালো হচ্ছে লালবাজারের কাছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, নিথর দেহে মৃত্যু নিশ্চিত করতেই ছুরি দিয়ে হাত ও গলা কাটা হয়ে থাকতে পারে। যদিও সবটাই স্পষ্ট হয়ে যাবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × two =