বিধাননগর পুরনিগম এলাকায় বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা, ত্রিস্তরীয় নজরদারির নির্দেশ স্বাস্থ্য দপ্তরের

বিধাননগর পুরনিগম এলাকায় ১৫ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৭ জন। সেখানে শুক্রবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৫। অর্থাৎ, ২২ দিনে ওই পুরনিগম এলাকায় ডেঙ্গির রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে আরও ৪৮ জনের। এর মধ্যে ১৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন শেষ ৭ দিনে। এই পরিসংখ্যান থেকে এটা স্পষ্ট যে, পুরনিগম এলাকায় বাড়তে শুরু করেছে ডেঙ্গির প্রকোপ। তবে সাধারণত জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ডেঙ্গি-আক্রান্ত আরও বাড়তে থাকে তাই এখন থেকেই স্বাস্থ্যকর্তারা ত্রিস্তরীয় নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন পুরনিগমকে।

বাড়ি-বাড়ি জমা জলের খোঁজে এবং বাসিন্দাদের সচেতন করতে সাধারণত আশাকর্মীদের পাঠানো হয় পুরনিগমের তরফে। আশাকর্মীরা বাড়ি-বাড়ি যাচ্ছেন কিনা, তার খোঁজ নিতে স্বাস্থ্যবিভাগের কর্মীদের পাঠাতে বলেছে স্বাস্থ্যভবন। সেই সঙ্গে এই আশা এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা ঠিকমতো কাজ করছেন কিনা, মানুষকে বোঝাচ্ছেন কিনা–তার খোঁজ নিতে সিনিয়র অফিসারদেরও এলাকায় ঘুরে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে।

স্বাস্থ্যভবনের আধিকারিকদের বক্তব্য, এই ত্রিস্তরীয় নজরদারির ফলে আমজনতার জল জমিয়ে রাখার প্রবণতা বন্ধ করার পাশাপাশি সচেতনতাও বাড়ানো যাবে। সেই সঙ্গে ফাঁকা জমি এবং খালগুলিতেও নজরদারি চালানোর কথা বলা হয়েছে।

এখানে বলে রাখা শ্রেয়, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মধ্যে বিধাননগরেই গত বছর ডেঙ্গি-আক্রান্তের সংখ্যা ছিল সর্বাধিক, ৪২০০ জন। সে কারণেই এ বার বিধাননগর জুড়ে কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করতে চাইছে স্বাস্থ্যভবন। এক স্বাস্থ্যকর্তা শনিবার বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। যার জেরে খারাপ রাস্তাগুলির অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। অনেক রাস্তাতেই তৈরি হয়েছে বড়-বড় গর্ত, জমছে জল। তা ছাড়া দুর্গাপুজো উপলক্ষে ইতিমধ্যেই প্যান্ডেল শুরু হয়েছে অনেক জায়গায়। সেই প্যান্ডেলের জন্যে খোঁড়া গর্তেও জল জমার আশঙ্কা রয়েছে।’

এ সবই মশার লার্ভা জন্মানোর জন্যে উপযুক্ত। তাই এখন থেকেই বাড়তি সতর্কতা জরুরি বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। বিধাননগর পুরনিগমের মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মশার লার্ভার খোঁজে সব জায়গায় অভিযান চলছে। পার্ক এবং খালগুলিকেও আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।’

সঙ্গে এও জানানো হয়েছে যে, ডেঙ্গি থেকে বাঁচতে বাড়ির আশপাশে জল জমতে দেবেন না। বাড়ি থেকে বেরোলেই ফুলহাতা জামা পরুন। রাতে মশারি টাঙিয়ে ঘুমোন। জ্বর তিন দিনের বেশি থাকলে রক্ত পরীক্ষা করান। রাস্তায় চায়ের কাপ, ডাবের খোলা দেখলে প্রশাসনকে জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × five =