পার্ক স্ট্রিটে নতুন আউটলেট খোলার মধ্য দিয়ে পূর্ব ভারতে সম্প্রসারণকে আরও জোরালো করল ‘চাইনিজ ওক’

চাইনিজ ডিশ পছন্দ করেন না এমন লোক খুবই কম। তবে জিভে জল আনা বলতে ঠিক যা বোঝায় চেমন চাইনিজ ডিশ মেল কলকাতার হাতে গোনা কয়েকটা জায়গাতেই। তবে এবার এই তালিকায় ফের আরও একবার যোগ হল পার্ক স্ট্রিটের নাম। ‘ফের আরও একবার’ এই শব্দবন্ধ ব্যবহার করার পিছনে কারণ অবশ্যই রয়েছে। পার্ক স্ট্রিট মানে প্রথমেই আমবাঙালির মনে যে ছবিটা ভেসে ওঠে তাতে চলে আসে বেশ কয়েকটি বিখ্যাত হোটেল  আর রেস্তোরাঁর ছবি। আর এই পার্ক স্ট্রিটেই এবার পকেট ফ্রেন্ডলি দামে চাইনিজ খাবার পৌঁছে দিতে হাজির ‘চাইনিজ ওক’-এর নয়া আউটলেট। যেখানে মিলবে ইন্দো-চাইনিজ স্বাদের হরেক রকম ডিশ। শুধু তাই নয়, পার্ক স্ট্রিটে চাইনিজ ওক তাদের আরও একটি ব্রাঞ্চ খোলায় এটাও স্পষ্ট বার্তা যাচ্ছে যে পূর্ব ভারতে তাদের সম্প্রসারণের আরও জোরালো করতে চায় চাইনিজ ওক। এই প্রসঙ্গে আরও একটা কথা না বললেই নয়,কলকাতায় মাত্র চার মাস আগে পা রেখেছে এই সংস্থাটি। আর এই চার মাসে মন জয় করেছে কলকাতাবাসীর। ফলে জোরদার চলছে ব্যবসাও। এরপরই চাইনিজ ওক পূর্ব ভারতের আরও গভীরে সম্প্রসারণের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছে বলেই জানালেন সংস্থার মার্কেটিং হে়ড কে ভিকাশ আইয়ার। এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এও জানান, কলকাতায় ইতিমধ্যেই আউটলেট রয়েছে নিউটাউন, চিনার পার্ক ও মেট্রোপলিস মল। এবার তার সঙ্গে যোগ হল পার্ক স্ট্রিটও। এর পাশাপাশি সংস্থাটির নতুন আউটলেটে লগ্নি করার এবং স্থানীয় পার্টনারশিপ গড়ে তোলার পরিকল্পনাও রয়েছে।

এখানেই শেষ নয়, সংস্থার পাখির চোখ হল আগামী তিন বছরের মধ্যে সারা দেশে ৫০০ জায়গায় ব্যবসা ছড়িয়ে দেওয়া, যাতে QSR বিভাগে শীর্ষস্থানে পৌঁছানোর লড়াইয়ে তাদের অবস্থান আরও জোরদার হয়।

এই প্রসঙ্গে সংস্থার তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, এই শহরের মানুষের মধ্যে ইন্দো-চাইনিজ স্বাদের জন্যে যে গভীর ভালবাসা রয়েছে তার প্রমাণ তারা পেয়েছেন। আর সেই কারণেই কলকাতার বাজারে জোরালো এবং ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির মধ্য দিয়ে এই ব্র্যান্ড এক সুস্থায়ী সম্প্রসারণের জন্যে তৈরি হচ্ছে।

এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সংস্থার তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে যে, ৩৫+ শহরের ২২০+ জায়গায় জোরালো উপস্থিতি সহ চাইনিজ ওক তাদের নিজেদের উপস্থিতি আরও বাড়াচ্ছে। তাদের লক্ষ্য মার্চ ২০২৫-এর মধ্যে ব্যবসাকে ৬৫০ কোটি টাকার মাত্রায় নিয়ে যাওয়া। ২০২৬ আর্থিক বর্ষের মধ্যে ১০০০ কোটি টাকার লক্ষ্যে পৌঁছনোর উচ্চাকাঙ্ক্ষাও রয়েছে। আর পূর্ব ভারতে সম্প্রসারণ কোম্পানির বৃহত্তর দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যের অংশ। লক্ষ্যটি হল ২০২৫ আর্থিক বর্ষের মধ্যে ২০টি শহরে ১০০ নতুন রেস্তোরাঁ খোলা এবং তিন বছরের মধ্যে টিয়ার ২ ও টিয়ার ৩ বাজারের উপর জোর দিয়ে ৫০০+ লোকেশনে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টাও তারা করবে।  কোম্পানি আগামী এক বছরে এই অঞ্চলে ২৫+ আউটলেট খোলারও পরিকল্পনা নিয়েছে।

আয়ুশ মধুসূদন আগরওয়াল, ফাউন্ডার অ্যান্ড ডিরেক্টর অফ লেনেক্সিস ফুডওয়ার্কস এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন  ‘কলকাতা আমাদের জন্যে অন্যতম প্রধান বাজার। গত কয়েক মাসে ‘চাইনিজ ওক’ যে সাড়া পেয়েছে তাতে এই শহরের বুকে যে ব্যবসার এক বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে সে ব্যাপারে আমাদের বিশ্বাস আরও বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। শক্তিশালী এবং ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির সুবাদে আমরা এখন মন দিচ্ছি কলকাতায় ব্যবসাকে আরও বড় করা এবং পূর্ব ভারত জুড়ে আরও ছড়িয়ে দেওয়ার উপরে। আমাদের লক্ষ্য এই অঞ্চলে নতুন আউটলেট খুলে একটা জবরদস্ত নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, আমাদের সরবরাহ শৃঙ্খল আরও উন্নত করা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা। এই যাত্রায় আমরা উচ্চমানের, সাধ্যমত দামে ইন্দো-চাইনিজ খাবার সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করবো। একইসঙ্গে ভারতের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় খাবারের বাজারে আমরা আমাদের উপস্থিতিকে আরও জোরদার করব।’

শুধু তাই নয়, এই সম্প্রসারণ উল্লেখযোগ্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে বলেও আশা করছেন সংস্থার কর্তারা।  কারণ প্রত্যেকটি নতুন আউটলেটে রান্নাঘরের কাজকর্ম, গ্রাহক পরিষেবা, লজিস্টিক্স ও সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থাপনায় প্রত্যক্ষ ও অপ্রত্যক্ষ কাজ তৈরি হবে। লেনেক্সিস ফুডওয়ার্কস স্থানীয় বিক্রেতা ও সরবরাহকারীদের সঙ্গেও হাত মিলিয়ে কাজ করবে যাতে খাবারের জন্যে তাজা কাঁচামাল আনতে মৌলিকত্ব এবং দক্ষতা নিশ্চিত করা যায়। এর ফলে সুস্থায়ী বৃদ্ধির প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা আরও জোরদার হবে।

এই প্রসঙ্গে আরও একটা কথা না বললেই নয়, কলকাতায় চালু হওয়া উদযাপন করতে চাইনিজ ওক কিছু এক্সক্লুসিভ, সীমিত সময়ের অফার চালু করতে চলেছে, যার মধ্যে আছে:

  • ₹৯৯ সুপারবোল কম্বো – মাঞ্চুরিয়ান, নুডলস বা গ্রেভি এবং পেপসি সহ একটি শর্তহীন খাবারের অফার। মাঞ্চুরিয়ান গ্রেভি, নুডলস (অথবা) ভাত এবং (এবং) পেপসি

 

  • ওক ওয়েডনেসডে BOGO – বাছাই করা খাবার একটা কিনলে একটা বিনামূল্যে।

 

  • সুপার সানডে’জ – মেনুর যে কোনো খাবারের দামে ১৪৯/- টাকা ছাড়।

 

এই শহরের চাইনিজ ডিশপ্রেমীদের কথা মাথায় রেখে, চাইনিজ ওক অঞ্চলভিত্তিক কিছু খাবার চালু করবে এবং মগ্ন হয়ে যাওয়ার মত ডিজিটাল ডাইনিং অভিজ্ঞতা জোগাবে। এর মধ্যে থাকবে AR চালিত অর্ডার দেওয়ার গ্যাজেট, একটি CGI লঞ্চ অ্যানিমেশন এবং একটি আদানপ্রদানমূলক ইনস্টাগ্রাম গেম ডিজাইন করা হয়েছে। আর তা করা হয়েছে খাদ্যরসিকদের মনোরঞ্জনের জন্যে।

চাইনিজ ওক, বিগ বোল এবং দ্য মোমো কো-র মত ক্রমশ বাড়তে থাকা পোর্টফোলিওর সুবাদে লেনেক্সিস ফুডওয়ার্কস গুণমান, উদ্ভাবন ও ক্রেতাদের তৃপ্তির ক্ষেত্রে এই শিল্পক্ষেত্রে নতুন মাপকাঠি তৈরি করছে। পূর্ব ভারতে কোম্পানির সম্প্রসারণ সারা দেশের ক্রেতাদের নাগালে উচ্চমানের, সাধ্যমত দামে সুস্বাদু ডাইনিং অভিজ্ঞতা পৌঁছে দেওয়ার প্রতিজ্ঞতাবদ্ধতার প্রতিফলন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 + 13 =