সোমবার এনআরএস হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন ট্যাংরা কাণ্ডের ছোট ভাই প্রসূন দে। রাতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মঙ্গলবার প্রসূনকে শিয়ালদহ আদালতে পেশ করে পুলিশ। তাঁকে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন করা হবে তাঁদের তরফে। প্রসূনের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৩ (১) অর্থাৎ খুনের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
এদিনের শুরুতেই আদালতে লিগ্যাল এইড অ্যাডভোকেট জানান, প্রসূন দে আইনজীবী রাখতে চাইছেন না। শুধু তাই নয়, ওকালতনামাতেও সই করছেন না। সঙ্গে এও জানিয়েছেন, চার্জশিট হলে আইনের হাত ধরে মৃত্যুর রাস্তা বেছে নিতে চায়।
এরপর বিচারক অভিযুক্তকে এজলাসে নিয়ে আসার নির্দেশ দেন। প্রসূন দে গিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর পর বিচারক প্রশ্ন করেন, তিনি আইনজীবী রাখবেন কি না। উত্তরে প্রসূন ‘ না’ জানান। এরপর বিচারক তখন তাঁকে ফের প্রশ্ন করেন, বিনা পয়সায়, কোনও টাকা লাগবে না তাও রাখবেন কি না সে ব্যাপারেও। উত্তরে প্রসূন ফের ঘাড় নেড়ে ‘না’-ই জানান। বিচারক ফের তাঁকে প্রশ্ন করেন, তাঁর কিছু বলার আছে কি না। প্রসূন দৃশ্যত একই ভঙ্গিমায় বলেন, ‘না’।
এরপর বিচারক প্রসূনের উদ্দেশ্যে বলেন, পুলিশ আপনাকে পুলিশ কাস্টডিতে চাইছে। আপনকে জেলে পাঠানো হবে না। ওনাদের কাছে থাকতে হবে। এ ব্যাপারে প্রসূনের কিছু বলার আছে কি না তাও জানতে চান বিচারক। প্রসূন আবারও ঘাড় নেড়ে না-ই জানান।
এদিকে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়, স্ত্রী ও বৌদির হাতের শিরা ও গলা কেটে খুন করেছেন প্রসূনই। সে কথা তিনি নিজের মুখে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। দু’জন বউ আত্মহত্যার চেষ্টা করে না পারায় প্রসূন হাত কেটে দেন বলে পুলিশের কাছে জানিয়েছেন। হাত ও গলা কেটে আওয়াজ কমের জন্য বালিশ দিয়ে মুখও চাপা দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছিলেন তাঁরা। বাড়ির মহিলাদের মেরে আত্মহত্যার জন্য বেরিয়েছিলেন তিনি, তাঁর দাদা ও নাবালক ছেলে। আপাতত নাবালক ও তাঁর বাবা অর্থাৎ প্রসূনের দাদা প্রণয় এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশের তরফে আদালতে চার দিনের হেফাজত চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছিল। আদালত দু’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
একইসঙ্গে পুলিশের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, প্রসূন পুলিশের কাছে নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে ছোট ভাইয়ের সঙ্গে বড় ভাই প্রণয়ও প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত কিনা, সে বিষয়ে এখনও সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত নয় পুলিশ। সেক্ষেত্রে প্রণয় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলে তাঁকেও গ্রেফতার করবে পুলিশ। পরে দুজনকেই হেফাজতে নিয়ে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। অন্যদিকে, প্রসূনকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।