যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। এর পাশাপাশি দ্রুত শুনানির আর্জি জানানোও হয়েছিল। তবে বুধবার এই আর্জি খারিজ করে দিলেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। মামলা দায়ের প্রসঙ্গে তিনি স্পষ্ট জানান, যাদবপুরের বর্তমান পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করতে রাজি নন।
এদিকে আদালত সূত্রে খবর, মামলাকারী আইনজীবী অর্ক নাগের দাবি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি যাতে দূর স্বাভাবিক হয় তার জন্য হাইকোর্ট অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করুক। কিন্তু প্রধান বিচারপতির সাফ বক্তব্য, ‘আইনশৃঙ্খলা দেখার দায়িত্ব রাজ্যের। রাজ্য পুলিশই পরিস্থিতি সামলাবে।’ এর পাল্টা আইনজীবী জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গেটের মুখে তাদের নিরাপত্তারক্ষী দাঁড় করিয়ে রেখেছে। রাজ্য পুলিশকে ভিতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। এর পাশাপাশি ওই আইনজীবী আরও জানান, প্রতিদিন পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বুধবার যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে না আসেন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে ছাত্র-ছাত্রীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় অকেজো করে দেওয়া হবে বলে দাবি তাঁর। যদিও প্রধান বিচারপতি এই যুক্তি মানতে চাননি। এই প্রসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘আপনি কি চাইছেন সেন্ট্রাল ফোর্সকে দায়িত্ব দেব?’ সঙ্গে এও বলেন, ‘এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব, তারা কী করবে, না করবে। একটা ঝামেলা হয়েছে। সংবাদপত্রে দেখলাম তা অনেকটাই মিটেছে। পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক।’ এই প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এইসব ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষ হস্তক্ষেপ না করলেই ভাল। বিশ্ববিদ্যালয় ইউজিসি-র নির্দিষ্ট নিয়মে চলে। আর এখানেই প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, ‘আদালত কি বিশ্ববিদ্যালয়কে বলতে পারে তুমি গেটের চাবি এখন তৃতীয় পক্ষ কাউকে দাও, আর সন্ধেবেলা ফেরত নিয়ে নাও? আমার মনে হয়, নিজে থেকেই সমস্যা মিটে যাবে।’ এই বলে তিনি জরুরি ভিত্তিতে এই মামলার শোনার আর্জি খারিজ করেন। সঙ্গে এও জানান, স্বাভাবিকভাবে লিস্টে যখন আসবে, তখন শুনবেন।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হওয়ার সময় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলার সূত্রপাত। অভিযোগ, সেই সময়ে উপাচার্য আহত হন এবং দুই ছাত্রও গুরুতর চোট পান। এক পড়ুয়ার অভিযোগ, শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি তাঁকে চাপা দিয়েছে, অন্য পড়ুয়ার পায়ের উপর দিয়ে গাড়ির চাকা চলে গিয়েছে। এরপর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। প্রসঙ্গত বুধবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার জন্য বিকেল ৪টা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয়। তাঁরা জানিয়েছে, যদি উপাচার্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাঁদের সঙ্গে কথা না বলেন, তবে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন। এদিকে উপাচার্য অসুস্থ হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি।