ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রকে এবার পাখির চোখ করতে চলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, অন্তত এমনটাই খবর বঙ্গের স্যাফ্রন ব্রিগেড সূত্রে। এর আগে একুশের বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামে মুখোমুখি হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূল সুপ্রিমোকে হারিয়ে সেখানে পদ্ম ফুটিয়েছিলেন শুভেন্দু। পরবর্তীতে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হন মমতা। ছাব্বিশের ভোটে কি সেই আসনের দিকেই নজর রাজ্যের বিরোধী দলনেতার তা নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে অনেকদিন থেকেই চলছে চর্চা। এই আবহে ভবানীপুরের ‘সক্রিয়’ বিজেপি নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক সেরে ফেললেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, কিছুদিন আগে শুভেন্দু মন্তব্য করেছিলেন, নন্দীগ্রামের থেকে ভবানীপুরে জেতা সহজ। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল তুলে ধরে বিজেপির বক্তব্য, ভবানীপুরের ৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫টিতে এগিয়ে বিজেপি। ৬৩, ৭০, ৭১, ৭২ এবং ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিল বিজেপি। আর তৃণমূল এগিয়ে ছিল ৭৩, ৭৭ এবং ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে। মুখ্যমন্ত্রী ৭৩ নম্বরের ওয়ার্ডের ভোটার। লোকসভা ভোটের নিরিখে এই ওয়ার্ডে বিজেপি পিছিয়ে মাত্র ২৭৯ ভোটে পিছিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী যে ওয়ার্ডের ভোটার, সেখানেই কার্যালয় খুলতে চান শুভেন্দু।
বঙ্গ বিজেপি সূত্রে খবর, ভবানীপুর বিধানসভার অন্তর্গত ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে কার্যালয় তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নন্দীগ্রামের এই বিজেপি বিধায়ক। আগামী ১ মে এই কার্যালয় উদ্বোধন করতে চান তিনি। আরও জানা গিয়েছে, ১০০ জনের বেশি কর্মী নিয়ে একটি টিম তৈরি করা হচ্ছে। যাঁরা মূলত ওই এলাকার তথ্য সংগ্রহ করবেন।তবে তাঁদের পরিচয় গোপন রাখা হবে।
এদিকে আবার গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের সভা ছিল। সেই সভা থেকে দলের সর্ব স্তরের নেতাদের ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের প্রস্ততি নেওয়ার নির্দেশও দেন মমতা। সেই সঙ্গেই ভোটার তালিকায় পদ্ম শিবির ‘ভুয়ো’ ভোটার জুড়ছে, এই অভিযোগ তুলে সমগ্র দলকেই বুথে বুথে নামিয়েও দেন। আর এখানেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি নেতৃত্ব আশঙ্কা করছে, এই ‘কৌশলে’র মাধ্যমে ভোটার তালিকা থেকে বিরোধী ভোটারদের নাম ছাঁটাই করতে চাইছে তৃণমূল। বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু ভোটার লিস্ট থেকে কারোর নাম যাতে বাদ না যায়, সেই বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখার নির্দেশও দিয়েছেন। সঙ্গে এও জানা যাচ্ছে, দক্ষিণ কলকাতা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ খটিকের নেতৃত্বে ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের ভুয়ো ভোটার সংক্রান্ত কর্মসূচিতে নজরদারি শুরু হয়েছে। এদিকে ছাব্বিশের ভোটে মমতা-শুভেন্দু ফের মুখোমুখি হবেন কিনা সেই বিষয়ে জানা না গেলেও, ভবানীপুরের বিজেপির পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে শুভেন্দু অধিকারী সক্রিয় থাকছেন বলে মনে করছেন সেখানকার দলীয় নেতা-কর্মীরা।
প্রসঙ্গত, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজয়ের পর ভবানীপুর থেকে উপনির্বাচনে জেতেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এগারো সালে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর ভবানীপুর থেকে বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়ান মমতা। একুশের নির্বাচনের কয়েকমাস বাদ দিলে ভবানীপুরের বিধায়ক মমতা-ই। ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই বিধানসভা কেন্দ্রেই বাড়তি নজর দিয়েছেন শুভেন্দু।