ট্যাংরার ঘটনার পুনর্নির্মাণে প্রসূনকে নিয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ

ট্যাংরা কাণ্ডে প্রসূন দেকে গ্রেফতার করার পরই পুলিশ জানিয়েছিল যে, তাঁকে নিয়েই ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে। এই পরিকল্পনা মতো বুধবার দুপুরেই প্রসূনকে ফের ট্যাংরার সেই ‘অভিশপ্ত’ বাড়িতে নিয়ে যায় পুলিশ। ইতিমধ্যে তিনি জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। সেই প্রেক্ষিতে কাকে, কোথায় আর কখন খুন করলেন প্রসূন, সেটাই বুঝতে চাইছেন তদন্তকারীরা।

প্রসূন ইতিমধ্যেই পুলিশকে জানিয়েছেন, স্ত্রী রোমি তাঁর মেয়ের পা চেপে ধরেছিলেন এবং তিনি তাঁর মুখে বালিশ চেপে শ্বাসরোধ করে খুন করেন। তারপর একে একে রোমি এবং বৌদি সুদেষ্ণাকেও তিনি খুন করেছিলেন। যদিও দাদা প্রণয়কে তাঁর মুখোমুখি বসিয়ে জেরার ভাবনা রয়েছে পুলিশের। প্রসূন আদতে কতটা সত্যি বলছেন বা বলছেন না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে চাইছে পুলিশ।

এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়,গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ভোরের দিকে ইএম বাইপাসে অভিষিক্তা মোড়ের কাছে দুর্ঘটনায় জখম হয় প্রণয়, প্রসূন ও প্রণয়ের ছেলে প্রতীপ। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ এরপরই সামনে আসে অতুল শূর রোডের দে পরিবারের মারাত্মক ঘটনা। এর আগে আহত নাবালকও শিশু সুরক্ষা কমিশনের কাছে দাবি করেছিল যে, কাকাই খুন করেছে। তাঁকে মারতে এলে সে মরার ভান করে পড়েছিল। বড় ভাই প্রণয়ও আগে পুলিশকে জানিয়েছিলেন, হাত কাটার ভাবনা তাঁর ভাইয়েরই ছিল। তিনি নিজে ভয়ে কাটতে পারেননি। অনুমান, ঘটনার পুনর্নির্মাণ থেকে আসল বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে।

এদিকে সোমবারই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর প্রসূন দেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার তাঁকে শিয়ালদহ আদালতে পেশ করলে বিচারক তাঁর ২ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। এদিকে আদালতে প্রসূন জানান, তিনি কোনও আইনজীবী চান না। আইনি প্রক্রিয়ায় কার্যত মৃত্যুবরণ করতে প্রস্তুত তিনি।

আদালতে প্রসূনকে হাজির করানো হলে বিচারক লক্ষ্য করেন তাঁর সঙ্গে কোনও আইনজীবী নেই। রাজ্যের আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়, প্রসূন কোনও আইনজীবী রাখতে চান না। বিচারক নিজে তাঁর থেকে এই বিষয়ে জানতে চাইলে প্রসূন স্পষ্ট করে ঘাড় নাড়িয়ে বুঝিয়ে দেন, তিনি চান না তাঁর হয়ে কোনও আইনজীবী লড়ুন। এদিকে তাঁর দাদা এখনও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তিনি ছাড়া পেলে তাঁকেও গ্রেফতার করবে পুলিশ। তারপরই চূড়ান্তভাবে ট্যাংরা কাণ্ডের আসল ঘটনা প্রকাশ পেয়ে যাবে বলেই আশা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 4 =