হাসিনা সরকারের শাসনকালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে মোটের উপর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কই ছিল। কিন্তু শত চেষ্টাতেও সফল হয়নি তিস্তা চুক্তি। ফলে হাসিনা যা করে দেখাতে পারেননি তা ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার করে দেখাতে পারে কিনা তা নিয়ে চলছিল চর্চা। কোনও সমাধান সূত্র বের হয় কিনা সেদিকে নজর ছিলই। কিন্তু, কিছুতেই চিঁড়ে ভিজল না এবারেও। বাংলাদেশের সঙ্গে জলবন্টন নিয়ে এবারের ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেও তিস্তার জলবণ্টন নিয়ে কোনও আলোচনাই হল না বলেই খবর। বরং বাংলাদেশ থেকে আগত সে দেশের নতুন সরকারের প্রতিনিধি দল মহানন্দা নদীর উপর বাঁধের কারণে তাঁদের দেশের বেশ কিছু নদীতে জল কমছে বলে জানান।
রাজ্য সরকার সূত্রের খবর, মহানন্দা নদীর জলের প্রবাহ এ রাজ্যের ভিতরে অন্তর্মুখী। জলের উপর প্রবাহ নির্ভরশীল। ফলে প্রবাহ পরিবর্তন হলে এ রাজ্যের দিকেই হবে। বাংলাদেশের দিকে নয়। যদিও বৈঠকে এ প্রসঙ্গ ওঠায় রাজ্য বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই এপার থেকে এপারে এসেছিলেন ইউনূসের প্রতিনিধি দল। দলে ছিলেন মোট ১১ সদস্য। নেতৃত্বে বাংলাদেশের নদী কমিশন (জেআরসি)-এর সদস্য মুহাম্মদ আবুল হোসেন। তাঁরা ফারাক্কা ব্য়ারেজ ঘুরেও দেখেন। সেখান থেকে ফিরে সোজা আসেন কলকাতায়। সেখানেই ৬ ও ৭ মার্চ ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে যোগ দেন। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল, রাজ্য সরকারের সেচ এবং জনশক্তি দফতরের সচিব এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল এই বৈঠকে অংশ নেন। ত্রিপাক্ষীয় এই বৈঠকে তিস্তা এবং গঙ্গার জল বণ্টন চুক্তি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কথা হল না তিস্তা নিয়ে। বাইপাসের ধারে একটি পাঁচতারা হোটেলে ২ দিন ধরে এই বৈঠক হয়।
তবে এই বৈঠকে জলবন্টন ছাড়াও দূষণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। বাংলাদেশের বেশ কিছু নদীর পাশে চিনিকল থাকায় দূষণ বাড়ছে এবং তাতে এ রাজ্যের সীমান্ত লাগোয়া কিছু এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে। এ প্রসঙ্গও উঠে এসেছে আলোচনায়। বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা পাল্টা বিষয়টি নিয়ে দেখার আশ্বাস দেন বলে রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর।