২০১০-এর আগে ওবিসি সার্টিফিকেটে নিয়োগে বাধা নেই, জানাল হাইকোর্ট

হাইকোর্টে ওবিসি মামলায় কেন সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া অনির্দিষ্টকাল বন্ধ করা হচ্ছে, তা জানতে চেয়ে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে ভার্চুয়ালি তলব করেন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ। এরপরই হাইকোর্টের তরফ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়, আদালতের নির্দেশের জন্য কোন নিয়োগ আটকে নেই। ওবিসি শংসাপত্র বাতিল মামলায় মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের হাজিরায় এমন ভাবেই স্পষ্ট বার্তা দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিকে এই মামলায় আগেই রাজ্য সরকার হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া তারা বন্ধ বা বিলম্বিত করছে।

এদিনের শুনানিতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা প্রশ্ন করেন, ‘রাজ্যের সর্বোচ্চ আধিকারিক মুখ্যসচিব। এ বিষয়ে তাঁর নিয়ন্ত্রণ না থাকলে কার থাকবে?’ এর পাশাপাশি আদালতে এদিন এও স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়, হাইকোর্টের ওবিসি নির্দেশের জন্য কোন নিয়োগে বাধা নেই।

এরই রেশ ধরে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী মুখ্যসচিবের কাছে এও জানতে চান, রাজ্য বা মুখ্যসচিবের এবিষয়ে কোন নিয়ন্ত্রণ আছে কি না সে ব্যাপারেও।  উত্তরে মুখ্যসচিব বলেন, ‘সেপ্টেম্বরে সব দফতরে এই অর্ডারে জানানো হয়েছে। ল’অফিসার ইত্যাদির পরামর্শে একটু দেরি হয়েছে। আমাদের কোনও আদালতকে না মানার কোন বিষয় নেই। তবে এটা একটা ভুল সেটা স্বীকার করছি।’ এরপরই বিচারপতি মান্থা বলেন, ‘ওবিসি সার্টিফিকেট, যাঁরা ২০১০ সালের এর আগে পেয়েছেন,  তাঁদের নিয়োগে কোন বাধা নেই। তাই আমাদের উপরে দোষ চাপাবেন না। বলবেন না যে আমরা চাকরিতে বাধা দিয়েছি।’ এই প্রসঙ্গে বিচারপতি মান্থার রাজাশেখর মান্থার তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘আপনি সবচেয়ে বড় আধিকারিক। আপনার লোকেরা মানছেনা। এটা আমাদের কাছে খারাপ লাগছে। আপনাকে আদালতে ডাকাও পেইন ফুল। আপনার কোথা না শুনলে আর কার কথা শুনবেন ওঁরা?’ উত্তরে মুখ্যসচিব বিচারপতিকে জানান, এ বিষয়ে সতর্ক হবেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত বছর ২২ মে কলকাতা হাই কোর্টে রাজ্যের প্রায় ১২ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে দিয়েছিল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ। উচ্চ আদালতের নির্দেশ ছিল, ২০১০ সালের পর থেকে তৈরি সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করতে হবে।  হাইকোর্টে মামলা হলে ১১৩ টি শ্রেণির সমস্ত সার্টিফিকেট বাতিল করা হয়। যদিও ২০১০ সালের আগের ৬৬টি শ্রেণি নিয়ে হাইকোর্ট হস্তক্ষেপ করেনি। এরপরে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে গেলেও কোনও স্থগিতাদেশ পায়নি। এরপর রাজ্য সরকার সমস্ত নিয়োগের প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়। রাজ্য সরকারের যুক্তি তাঁরা ১১৩ টি শ্রেণিকে বাদ করতে চায়না তাই তাঁদের ছাড়া নিয়োগ করবে না।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × five =