তৃণমূলের পার্টি অফিসে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ নির্যাতিতার পরিবার। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এদিন আদালতে আসেন স্বয়ং নির্যাতিতাও। পুলিশের বিরুদ্ধে তাদের বক্তব্য, থানায় অভিযোগ জানালেও ধর্ষণের ধারা যুক্ত করেনি পুলিশ। শুধু তাই নয়, গ্রেফতার পর্যন্ত করা হয়নি অভিযুক্তকে। এককথায়, পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে নির্যাতিতার পরিবার।
গত ৯ মার্চ পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ে তৃণমূলের পার্টি অফিসে ওই মহিলাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ‘বিজেপি করি না’ এই মুচলেকা তৃণমূলের পার্টি অফিসে জমা দিতে গিয়ে ওইদিন তিনি ধর্ষণের শিকার হন বলে দাবি নির্যাতিতা মহিলার। মহিলার স্বামীর দাবি, এক সময় তাঁর স্ত্রী বিজেপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। কিন্তু তিনি আর এখন বিজেপি করেন না। সেই কথা লিখিতভাবে জানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি। সেই মতো মুচলেকা নিয়ে শাসকদলের পার্টি অফিসে যান মহিলা। তখনই তাঁকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এরপরই নির্যাতিতাকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করতে হয়। এদিকে শাসকদলের পার্টি অফিসে ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর তৈরি হয়। রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এক্স হ্যান্ডলে তৃণমূলকে আক্রমণ করে তিনি লেখেন, ‘এতদিন তৃণমূলের নেতাদের চুরি, ডাকাতি, কাটমানি নিতে দেখেছেন। এখন তৃণমূলের নেতারা তাদের দলীয় কার্যালয়ে মহিলাদের ডেকে এনে ধর্ষণ করছে।’
নারায়ণগড়ে মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে পদক্ষেপ করে জাতীয় মহিলা কমিশনও। অভিযোগ নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপের জন্য পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেয় তারা।
এবার নির্যাতিতার পরিবার আদালতের দ্বারস্থ হল। মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, শুধুমাত্র এফআইআর দায়ের হয়েছে। কিন্তু আর কিছুই হয়নি। আইনজীবীর আবেদন, নির্যাতিতাকে নিরাপত্তা দিক আদালত। পাশাপাশি যেকোনও তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। এই মর্মেই মামলা দায়ের করার আবেদন জানানো হয়। মামলা দায়ের করার অনুমতি দেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। তারপরই মামলা দায়ের করে নির্যাতিতার পরিবার।