শীর্ষ আদালতের নির্দেশে চাকরি খুইয়েছেন প্রায ২৬ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারি। তবে এমন ঘটনার পরও তৃণমূল নেতারা বারবার বলছেন ভরসা রাখার কথা। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যে ব্যখ্যা দিয়েছেন তার উপর ভরসা রাখুন।’ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকেও বসতে চলেছেন চাকরিহারারা। ৭ তারিখ বৈঠকে বসবেন বলে আগেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, তার আগেই বড় কর্মসূচি নিয়ে ফেললেন চাকরিহারারা।এই নবান্ন অভিযানের ডাকে সামিল হচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী, চাকরিজীবী ও চাকরিহারা ঐক্যমঞ্চ।
সূত্রে খবর, চাকরি প্রার্থীদের ১২–১৩ টি মঞ্চ সম্মিলিত ভাবে ২১ এপ্রিল এই নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলন করে চাকরিহারাদের তরফে এদিন এই ঘোষণা করা হয়। সংবাদিক বৈঠক থেকেই মঞ্চের নেতৃত্বের তরফে বলা হয়, কয়েকটিসংগঠনইতিমধ্যেযোগাযোগকরেছে।আগামীতেতাঁরাওএইমঞ্চেসামিলহবেবলেইআশাবাদীতাঁরা।
এরই পাশাপাশি তাঁদের তরফ থেকে এক সাংবাদিক বৈঠক থেকে স্পষ্ট হুঁশিয়ারির সুরে জানানো হয়, ‘আমরা পয়লা বৈশাখ পর্যন্ত সময় দিচ্ছি, এর মধ্যে আমরা মুখ্যন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের ডাক না পেলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটব।’ এদিন যে সাংবাদিক বৈঠক হয় সেখানে বারবার প্রশ্ন ওঠে সরকারের উদাসীনতা নিয়ে। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে সংবাদিক বৈঠকে বারবার প্রশাসনের ওপর ক্ষোভও উগরে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁরা এও জানানস ‘এর আগেও আমরা একাধিকবার সম্মিলিতভাবে কর্মসূচি নিয়েছি। কিন্তু প্রশাসনের কোনও সদর্থক ভূমিকা দেখতে পাইনি। আমরা ভেবেছিলাম মুখ্যমন্ত্রী মানবিক। কিন্তু উনি অমানবিক মুখ্যমন্ত্রী। সরকারের সদিচ্ছার অভাবে চাকরি হারিয়েছেন শিক্ষক শিক্ষকা ও শিক্ষা কর্মীরা। আমারও এই বঞ্চনার শিকার। আমরা আর প্রতিশ্রুতি নয়, স্পট বার্তা চাই, বাস্তবায়ন চাই।’ তবে সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ওপর ভরসা য়ে তাঁরা রেখেছিলেন তাও স্পষ্টভাষাতেই জানানো হয়। তবে এখানেও ওঠে এক প্রশ্নচিহ্ন, আর কতদিন? এরই সুর টেনে খানিক ক্ষোভের সুরেই এদিন তাঁদের বলতে শোনা যায়, ‘সব চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ আইনই জটিলতার কারণে আটকে নেই। সরকার চাইলেই সমাধান সম্ভব। শুধু বৈঠক নয়, বৈঠকের মধ্যে দিয়ে সমাধান চাই।’ এরই রেশ ধরে ৭ তারিখের বৈঠকের প্রসঙ্গও উঠে আসে এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে। খানিক হতাশার সঙ্গেই তাঁদের বলতে শোনা যায়, ‘আমরা লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি, সে কারণে আমাদের প্রত্যেকটা দিন ভয়ের মধ্যে দিয়ে কাটাতে হয়। আমরা বেকার ভাতা চাই না।’
অন্যদিকে এদিনই আবার সংগ্রামী মঞ্চে যেতে দেখা যায় বেশ কিছু চাকরিহারাকে। এই সংগ্রামী যৌথ মঞ্চই আবার দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। মঞ্চ থেকেই এক চাকরিহারা শিক্ষক ৭ তারিখের বৈঠকের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। স্পষ্ট বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী তো ডেকেছেন আমাদের ঠিক আছে। কিন্তু উনি কাদের নিয়ে বসতে চাইছেন? যোগ্যদের নিয়ে নাকি অযোগ্যদের নিয়ে? যোগ্য–অযোগ্য যদি একসঙ্গে বসে, যাঁরা দুর্নীতি করে চাকরি পেয়েছে, আমরা যোগ্যরা তো তাঁদের সঙ্গে বসতে পারব না।’