হাইকোর্টের নির্দেশে মোথাবাড়ি যেতে বাধা নেই শুভেন্দুর

শর্তসাপেক্ষে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে অশান্ত মোথাবাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ পরিষ্কার জানান, এলাকা পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়া হলেও রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে একাধিক শর্ত মেনে চলতে হবে।

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মোথাবাড়ি থানার অধীনে প্রস্তাবিত চারটি জায়গায় যেতে পারবেন শুভেন্দু। তবে ১১ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩ টের মধ্যে  নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রাজ্যের বিরোধী দলনেতার সঙ্গে মোট কটা কনভয় যাবে তা প্রশাসনকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ আরও জানান, এসপি মালদা পুরো পরিস্থিতি তদারকি করবেন। মোথাবাড়ি এলাকায় রাখতে হবে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। এছাড়া পরিস্থিতি কোনওভাবে খারাপ হলেই ফোর্স পাঠিয়ে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এলাকায় কোনওরকম মিছিল বা সভা করা যাবে না বলেই জানিয়েছে আদালত। আগামী ১৭ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিন রাজ্যকে বিস্তারিত রিপোর্ট জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিন সওয়াল জবাব চলাকালীন বিচারপতি রাজ্যের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, ১২ তারিখ শুভেন্দু অধিকারী যেতে পারবেন কি না তা নিয়ে। সঙ্গে এও জিজ্ঞাসা করা হয়, শুধু দু’জন যাবেন কি না তা নিয়ে। পাল্টা রাজ্যের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় ১২ তারিখ অন্য প্রোগ্রাম আছে। সে কারণে ঝামেলা হতে পারে। ১১ তারিখ আবার শুক্রবার।

পাল্টা মামলাকারীর আইনজীবী প্রশ্ন করেন, শুক্রবার তো সমস্যা কি হয়েছে তা নিয়ে। উত্তরে বিচারপতি রাজ্যকে জানিয়ে দেন, তেমন হলে উনি ১১ তারিখ যাবেন, দরকারে এক্সট্রা ফোর্স দিয়ে দেবেন।

প্রসঙ্গত, মার্চ মাসের শেষের দিকে অশান্ত হয়ে ওঠে মালদহের মোথাবাড়ি। দোকান এবং গাড়ি ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ। পাল্টা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানো হয়। ঘটনার প্রতিবাদে সোচ্চার হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে লেখেন, ‘তোষণবাজ মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের হিন্দুদের অস্তিত্ব বিপন্ন করে তুলছেন। মালদহ জেলার মোথাবাড়ি অঞ্চলে বেছে বেছে হিন্দুদের দোকানপাট ভাঙচুর ও লুঠ করা হয়েছে। এরপরই ছ’টি মামলা রুজু করে পুলিশ। সেই ঘটনার জল আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এই পরিস্থিতিতে হাইকোর্টের নির্দেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।’

এই ঘটনার পর গত শুক্রবার বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, ঘটনাটি স্পর্শকাতর, রাজ্য সরকারের দায়িত্ব নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। বিচারপতিরা এও বলেন যে,  এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। কিন্তু এদিনের শুনানিতে কেন্দ্রের তরফে এএসজি সওয়াল করেন, পরিস্থিতি এমন, চাইলে মোথাবাড়িতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 + 1 =