‘শিক্ষকদের হাতে লাঠি পর্যন্ত ছিল না। নিজেদের দাবি জানাতে গিয়েছিলেন। সঙ্গত দাবি। তাঁদের ওপর যেভাবে আক্রমণ করা হয়েছে তা বর্বরোচিত।’ চাকরি হারানো শিক্ষকদের ওপর পুলিশের আক্রমণের ঘটনায় এমনটাই প্রতিক্রিযা সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘শিক্ষা ধ্বংস করা হচ্ছে, ভবিষ্যৎ ধ্বংস করা হচ্ছে। রাস্তায় নামা জরুরি। আজই প্রতিবাদ হচ্ছে। সব অংশের কাছে আবেদন কাল সর্বত্র প্রতিবাদে নামুন।’ এখানেই শেষ নয়, এর পাশাপাশি সুজন এও বলেন, ‘হকের চাকরি ফেরানোর দাবি সঙ্গত। ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ দেওয়ার দাবি সঙ্গত। সেটি লুকিয়ে রেখেছে প্রশাসন। সেই দাবি জানানো কোনও অন্যায় নয়। তৃণমূলের দুর্নীতির কারণে চাকরি চলে গেলে তাঁরা এই দাবি তুলবেন না! তার জন্য লাঠিপেটা করতে হবে! এমনকি লাথি মারতে হবে! বর্বরতা চালাচ্ছে পুলিশ এবং প্রশাসন।’ এই প্রসঙ্গে সুজন এদিন এও বলেন, ‘অযোগ্যদের পাশে সরকার, চাকরি চোরদের পাশে সরকার। নেতাজি ইন্ডোরে যেভাবে শিক্ষকদের বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী যেন তিনি পাইয়ে দেবেন। সিভিক ভলান্টিয়ারের মতো কাজ করাবেন শিক্ষকদের। তাঁরা মানবেন কেন, তাঁরা তো যোগ্যতার পরীক্ষায় পাশ করেছেন।’
এদিকে বুধবার বিকেলেই কসবার অদূরে গড়িয়াহাট মোড়ে রাস্তা অবরোধ করেন শিক্ষকরা। বস্তুত এদিন জেলায় জেলায় ডিআই দপ্তরের সামনে প্রবল বিক্ষোভ দেখান শিক্ষকরা। এরপর বুধবার কসবায় কলকাতার ডিআই অফিসে চাকরি হারানো শিক্ষকদের ওপর কেবল লাঠি নয়, লাথিও মেরেছে পুলিশ। ধরে ধরে লাঠিপেটা করা হয় শিক্ষকদের। এদিকে রাজ্যের মুখ্যসচিব ‘আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার’ পরামর্শ দেন। কিন্তু দুর্নীতির প্রশ্নে একটি কথাও বলেননি। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আবার প্রশ্ন তোলেন কেন শিক্ষকরা ডিআই দপ্তরে যাবেন।
অন্যদিকে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার, এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কবুল করেছে যে দুর্নীতি হয়েছে। টাকার বিনিময়ে চাকরি হয়েছে। কিন্তু যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করে তালিকা আদালতে জমা দেয়নি। আদালত বারবার চাইলেও নিজেদের দুর্নীতি আড়াল করতে অযোগ্যদের নাম জানায়নি। উলটে প্রমাণ নষ্ট করতে ওএমআর শিট নষ্ট করেছে। কিন্তু তার ‘মিরর ইমেজ’ বা কম্পিউটারে ধরে রাখা প্রতিলিপি কোথায় সেই প্রশ্ন তুলে এদিন ডিআই অফিস যান চাকরি হারানো শিক্ষকরা।