যা হচ্ছে,তা তো মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেইঃ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় 

কসবায় পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে এসএসসি দফতরের সামনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অনশনে  চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ।একইসঙ্গে তাঁদের দাবি, ২০১৬-র এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ্য চাকরিহারাদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হোক।  এই আবহেই এ বার ঘটনাস্থলে পৌঁছোলেন বিজেপি নেতা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেখান থেকে আরও এক বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি আক্রমণ করেন তিনি। প্রশ্ন তুললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ভূমিকা নিয়েও।
অনশন শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই এসএসসি দফতরের সামনে পৌঁছান প্রাক্তন বিচারপতি তথা বিজেপি নেতা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ছিলেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়,রুদ্রনীল ঘোষ এবং এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডলও। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখাও করেন তাঁরা। সেখানেই রাজ্যের প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে অভিজিৎবাবু প্রশ্ন তোলেন,‘নিরীহ শিক্ষকদের উপর মামলা করলেন কেন? আসলে সব ভাঁওতাবাজি! ওঁরা জানেন ওঁরা অন্যায় করেছেন। তাই ওঁদের সুষ্ঠু ভাবে বিষয়টি মেটানোর কোনও ইচ্ছা নেই। ওঁরা এটা নিয়ে যতটা সম্ভব রাজনীতি করা যায়, তা-ই করছেন।’
শুধু তা-ই নয়, ধর্নাস্থল থেকে আরও এক বার মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে দুষেছেন অভিজিৎ। তিনি বলেন,‘যা হচ্ছে,তা তো মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই হচ্ছে। একটু পরেই হয়তো পুলিশ এসে এখানেও ঝাঁপিয়ে পড়বে। আমরা সহমর্মিতা জানাতে এসেছি। ভেঙে পড়বেন না। আমরা সম্পূর্ণ ভাবে আপনাদের পাশে আছি।’ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন রূপা গঙ্গোপাধ্য়ায় এবং চিত্তরঞ্জনও। রূপা বলেন,‘কাদের ঘুষ দিয়ে চাকরি হয়েছে, খুঁজলেই তাঁদের পাওয়া যাবে। তাঁদের বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে কেন?’ এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান গোটা ঘটনায় ব্রাত্য বসুর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি জানান, এসএসসির বর্তমান চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে কিছু কথা বলতে চান তিনি। চিত্তরঞ্জন বলেন, ‘আমি অধ্যাপক সিদ্ধার্থ মজুমদারকে স্পষ্ট ভাবে মনে করিয়ে দিতে চাই, উনি এই সরকারের কলেজ সার্ভিস কমিশনের প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন। উনি যে ভাবে তা পরিচালনা করেছিলেন,তার পর ওঁকে যে ভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তা ওঁর কাছেও বেদনাদায়ক। আমি চাইব উনি স্বমহিমায় ফিরুন। নিজের মানসিকতা, শিক্ষা, সংস্কার নিয়ে মাথা উঁচু করে উঠে দাঁড়িয়ে কাউকে পরোয়া না করে সুপ্রিম কোর্টের কাছে যান।’
এদিকে এসএসসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার পর বুধবারই এসএসসিকে ওএমআরের মিরর ইমেজ প্রকাশ্যে আনার জন্য দু’দিনের সময় বেঁধে দেন তাঁরা। সঙ্গে ঘোষণা করেছিলেন, এর অন্যথা হলে শনিবার তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন। অভিজিৎবাবু এই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার এও জানান, এ পর্যন্ত যা করেছেন,দলকে জানিয়েই করেছেন। প্রসঙ্গত,মমতাকে লেখা চিঠি বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যকে পৌঁছে দেবেন বলেছিলেন বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন বিচারপতি। অথচ বুধবার কথা দিয়েও বিকাশ ভবনে যাননি অভিজিৎ।
এদিকে এই ঘটনায় অভিজিতকে কটাক্ষ করে ব্রাত্য বলেন,‘মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিতে চাওয়ায় দলীয় রাজনীতিতে কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি হল কি না, দল ওঁকে বারণ করল কি না,সে সব উনিই বলতে পারবেন!’ তবে সেই জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে অভিজিৎ জানালেন,সব সময়েই তাঁর পাশে রয়েছে দল।
এদিকে এ বিষয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন,‘দল যে ওঁর পাশে নেই, সেটা বুধবারই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এটাও স্পষ্ট যে, উনি মুখে বলছেন ফর্মুলা আছে, সমাধান চান, আর বিজেপি সেই সমাধান করতে দিতে চায় না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 3 =