পাসপোর্ট জালিয়াতি মামলায় ধৃত আজাদ মল্লিক। এরপর দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে সামনে এল বিস্ফোরক সব তথ্য। ইডির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এক বছর অন্তর ভাড়াবাড়ি বদলাতেন এই আজাদ মল্লিক। ভুয়ো পাসপোর্ট বানাতে নিতেন ৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা। একইসঙ্গে ইডির তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে যে, আজাদের দুটি মোবাইল ফোনও ইডি বাজেয়াপ্ত করেছে। প্রসঙ্গত,
পাসপোর্ট জালিয়াতি মামলায় মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার এয়ারপোর্ট থানা এলাকার বিশরপাড়ায় আজাদের ভাড়াবাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। কয়েকঘণ্টা তল্লাশির পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর বুধবার বিচারভবনের বিশেষ ইডি আদালতে পেশ করা হয় তাঁকে।
ইডি সূত্রে খবর, পাসপোর্ট জালিয়াতি চক্রের মিডলম্যান হিসেবে কাজ করতেন আজাদ। তাঁর মোবাইলেই আসত পাসপোর্ট বানানোর নথি। পাসপোর্ট ছাড়াও আধার কার্ড, ভোটার কার্ডও বানিয়ে দিতেন। এই চক্র যাতে ধরা না পড়ে, তার জন্য ঘন ঘন বাড়ি বদলাতেন তিনি। একইসঙ্গে এদিন আদালতে ইডির তরফ থেকে জানানো হয়, আজাদ আদতে বাংলাদেশি নাগরিক। গত ১০ বছর ধরে ভারতে রয়েছেন। ভারতে তিনি ভুয়ো পাসপোর্ট,আধার বানিয়ে ফেলেছিলেন। মঙ্গলবার তল্লাশির সময় আজাদের বাড়ি থেকে তার আধার, পাসপোর্ট, ভোটার কার্ড উদ্ধার হয়। তার আধার কার্ড ও পাসপোর্টে জন্ম তারিখ আলাদা। ইডি সূত্রে আজাদ সম্পর্কে এ খবরও মিলছে যে, বাংলাদেশেও রয়েছে এই ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরি চক্রের এজেন্ট। সেখান থেকে যারা ভারতে আসতেন,তারা আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। আজাদের হাত ধরে কত বাংলাদেশি ভারতে ঢুকেছেন, জানতে তৎপর হয়েছে ইডি।
এখানেই শেষ নয়, আজাদ সম্পর্কে ইডির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ভারতে এসে আমদানি-রফতানি ব্যবসাও খুলে ফেলেছিলেন আজাদ। সঙ্গে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের ব্যবসাও শুরু করেন। এদিন আদালতে ইডি জানায়, আজাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২.৬২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এই দুর্নীতির টাকা কোথায় ব্যবহার হয়েছে সেটা দেখা হচ্ছে। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কখনও ২০ লক্ষ, কখনও তার বেশি জমা দেওয়া হয়েছে। এই টাকা কারা জমা দিত, কোথা থেকে কারা সেই টাকা তুলে নিত তা জানা জরুরি বলে আদালতে এদিনজানায় ইডি। আজাদের কাছে হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা আসত বলে ইডি দাবি করে।
ইডি আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশে তাঁর স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে বলে জেরায় স্বীকার করেছেন আজাদ। ইডির আবেদন মেনে আজাদকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে বিশেষ ইডি আদালত।