মালদহ শিবির পরিদর্শনে রাজ্যপাল, মুর্শিদাবাদ এখনই নয়

Featured Video Play Icon
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বারণ তিনি মানলেন না। শুক্রবার সকালেই মালদহের উদ্দেশে রওনা দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এরপর দুপুরেই মালদহে পৌঁছন তিনি। মালদহ টাউন স্টেশনে নেমে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল জানিয়ে দেন, এখনই মুর্শিদাবাদ যাচ্ছেন না। তবে দেখা করবেন ঘরছাড়াদের সঙ্গে। আর সেইকারণে শিবির পরিদর্শন করেন। এরপরই বৈষ্ণবনগরের পারলালপুরের উদ্দেশে রওনা হন রাজ্যপাল। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, মুর্শিদাবাদে হিংসার পর নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন মালদহের বৈষ্ণবনগরের পারলালপুর হাইস্কুলের ক্যাম্পে। এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, রাজ্যপাল আসার আগে স্কুল চত্বর থেকে গ্রামবাসীদের সরানোর চেষ্টা করে পুলিশ। অভিযোগে রাজ্যপাল ঢোকার আগে গ্রামবাসীদের তুমুল বিক্ষোভ মালদহে। শয়ে শয়ে মহিলা-পুরুষ হাজির হন এদিন। তাঁরা এদিন প্রশ্ন তোলেন, কোথায় যাবে হিন্দুরা বা আর কতদিন অত্যাচার সহ্য করতে হবে তা নিয়েও। সঙ্গে এ অভিযোগও ওঠে, মালদহে যেখানে মুর্শিদাবাদের মূলত ধুলিয়ানের বাসিন্দারা আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদের একরকম বন্দি করে রাখা হয়েছে। বাইরে বেরোতে দেওয়া হচ্ছে না। গ্রামবাসীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে অদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে নয়া ওয়াকফ আইন প্রত্যাহারের দাবিতে একাধিকবার উত্তপ্ত হয়েছিল মুর্শিদাবাদ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেনে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার সরজমিনে এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রনে বলে জানানো হয়েছিল। তবে প্রশাসনের তরফে এখনই হিংসা বিধ্বস্ত এলাকায় যেতে বারন করা হয়েছিল। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালকে এখনই ওই এলাকায় যাওয়া থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেছিলেন।
এদিকে এদিন সকালেই মালদহে পৌঁছন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। এদিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বন্দে ভারতে মালদহ টাউন স্টেশনে নামেন তাঁরা। সেখান থেকে গাড়িতে চেপে সোজা চলে যান পারলালপুর হাইস্কুলের ক্যাম্পের উদ্দেশে।  দুপুর নাগাদ ক্যাম্পে পৌঁছে ক্যাম্পে থাকা ধুলিয়ানের ঘরছাড়া পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। শোনেন ঘটনার বিবরণও। পাশাপাশি তাঁদের বিভিন্ন সমস্যা ও অভাব-অভিযোগের কথাও শোনেন। ঘরছাড়াদের সঙ্গে কথা বললেও সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। সূত্রের খবর প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দিল্লিতে গিয়ে কমিশনের আধিকারিকের কাছে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করবেন।
অন্যদিকে, মানবাধিকার কমিশনের এই পরিদর্শনে রাজ্যকে বদনাম করার চেষ্টা বলে মনে করছে শাসকদল তৃণমূল। কমিশনের প্রতিনিধিদের পরিদর্শন সম্পর্কে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা জানান, মুর্শিদাবাদের ঘটনায় প্রশাসন ও মুখ্যমন্ত্রী সবরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তা সত্ত্বেও রাজ্যকে বদনাম করতেই কমিশন পাঠানো হয়েছে। এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই রয়েছে। মন্ত্রীর যুক্তি, আগে মণিপুর যাওয়া উচিত ছিল মানবাধিকার কমিশনের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 4 =