ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় উত্তাল হয়েছিল মুর্শিদাবাদ। প্রাণ বাঁচাতে বহু মানুষ চলে গেছেন মালদহে। শুক্রবার সেখানের সেই আশ্রয় শিবিরে গেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পীড়িতদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এরপর শনিবার মালদহে থেকে মুর্শিদাবাদে পৌঁছেছেন রাজ্যপাল। সূত্রের খবর, আজই ধুলিয়ানে নিহত পিতা-পুত্রের বাড়ি যেতে পারেন বোস।
মুর্শিদাবাদের একাধিক এলাকায় হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল। সুতি, ধুলিয়ান থেকে শুরু করে সামশেরগঞ্জ, সর্বত্র কার্যত তাণ্ডব চলেছিল ওয়াকফ আইন বিরোধীদের। ধুলিয়ানেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক ব্যক্তি এবং তাঁর ছেলের। অন্য একজনও মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। মোট তিনজনের মৃত্যু এবং প্রচুর মানুষ আহত হওয়ার ঘটনায় রাজ্যজুড়ে ঘটে এক তোলপাড়। এই পরিস্থিতিতেই এলাকা পরিদর্শনের জন্য বেরিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
ইতিমধ্যে রাজ্যে রয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা। তাঁরা একাধিক এলাকায় গিয়ে আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলেছেন। রাজ্যপালও সেই ভূমিকা নিয়েছেন। সূত্রে খবর, শনিবার ধুলিয়ানে গিয়ে আক্রান্তদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চলেছেন তিনি। আলাদা করে কথা বলবেন নিহতদের পরিবারের সঙ্গেও।
মুর্শিদাবাদের অশান্তিতে যাঁরা ঘরছাড়া হন বলে অভিযোগ,তাঁদের একাংশকে নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাজভবনে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ অন্যরা। রাজ্যপালের কাছে তাঁরা পাঁচ দফা দাবি পেশ করেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতির দাবি,সেই অনুরোধে সাড়া দিয়েই রাজ্যপাল মালদহ-মুর্শিদাবাদ সফরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রী এখনই তাঁকে উপদ্রুত এলাকায় যেতে বারণ করেছিলেন। সেই অনুরোধ উপেক্ষা করেই মালদহের উদ্দেশে রওনা দেন রাজ্যপাল।
কেন ওইসব এলাকায় এখনই যেতে বারণ করেছিলেন তার ব্যাখ্যাও দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য ছিল, প্রাথমিক লক্ষ্য হচ্ছে শান্তি ফেরানো। স্থানীয় ছাড়া বাইরের কারও যাওয়া ঠিক নয় সেখানে। মমতা এও বলেন,’শান্তির বাতাবরণ ফিরে এসেছে। এখন কাজ হচ্ছে মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলা। সেই কাজ আগে করতে হবে। সেটাই প্রশাসন করছে। আমিও তো যেতে পারতাম, যাচ্ছি না তার কারণ আছে। আমি ঠিক সময়ে যাব। আমি অনুরোধ করব রাজ্যপাল সহ বাকিদের যাতে তাঁরা আরও কিছুদিন অপেক্ষা করেন।’
তিনি এও দাবি করেন, বাইরে থেকে কেউ কেউ এসে অত্যাচার করেছে, উর্দিধারীরাও আছে। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় দিতে হবে।