বাগুইআটিতে সুটকেসে মহিলার দেহ উদ্ধারের ঘটনার দুদিনের মধ্যে দেহ কার তা কিনারা করল বাগুইআটি থানার পুলিশ। তবে এই ঘটনায় নিঃসন্দেহে প্রশ্নচিহ্নের মুখে মুর্শিদাবাদ নবগ্রাম থানার পুলিশের ভূমিকা।
বাগুইআটি থানা সূত্রে খবর, যে মহিলার দেহ উদ্ধার হয়েছিল তাঁর নাম রিয়া ধর। বছর ত্রিশের রিয়ার বাড়ি মুর্শিদাবাদ নবগ্রামে। দুটি সন্তানের মাও তিনি। তবে ফেসবুকে তিন মাস আগে আলাপ হয় কৌশিক প্রামাণিক নামে বারাসতের এক ব্যক্তির সঙ্গে। এরপরই ধীরে ধীরে সম্পর্কের গভীরতা বাড়তে থাকে। এদিকে এরকম এক প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠার ঘটনাটি জানতে পারে রিয়ার স্বামী অমিত কুমার ধরও। স্বামী তাঁকে ঘটনাটি বোঝালে বিষয়টি মিটে যায়। এরপরে দিন ১৫ দিন আগে স্বামী ও সন্তানকে ছেড়ে রিয়া পালিয়ে আসে কৌশিকের কাছে। এরপরই নবগ্রাম থানায় রিয়ার স্বামী অমিত কুমার ধর মিসিং ডায়েরি করেন। তবে পুলিশ কোন গুরুত্ব দেইনি বলে অভিযোগ। এদিকে বারাসতে কৌশিকের ফ্ল্যাটে ওঠে রিয়া। সেখানে দিন ১৫ ছিলেন তিনি। এরপর ২২ তারিখ বারাসতের এক অচেনা ব্যক্তি রিয়া স্বামীর কাছে ফোন করে জানায় একটি ব্যাগ পাওয়া গিয়েছে এবং তার মধ্যে বেশ কিছু ডকুমেন্টস রয়েছে৷ সেই নম্বর থেকেই ফোন করছেন বলেও জানান জনৈক ওই ব্যক্তি।
বাগুইআটি ট্রলি ব্যাগ কাণ্ড
এরই মাঝে রিয়ার স্বামী অমিত কুমার ধরের সন্দেহ হয়। তিনি ফের মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানায় যান। ঘটনা পুলিশকে জানালে শেষমেষ অপহরণের মামলা দায়ের করা হয়। শষুধু তাই নয়, মুর্শিদাবাদ নবগ্রাম থানার পুলিশ কৌশিক পরামাণিককে গ্রেফতার করে তবে কোনও খোঁজ মেলেনি রিয়ার।
এরপরই গত ২২ এপ্রিল বাগুইআটি প্রতিবেশিপাড়া এলাকায় সুটকেসের মধ্যে মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার তদন্তে নেমে বাগুইহাটি থানার পুলিশ তদন্ত নামে বেশ কিছু তথ্য পাওয়ার পরেই রিয়ার স্বামী অমিত কুমার ধর এর সাথে যোগাযোগ করে। এরপর আরও বেশ কিছু তথ্য পাওয়ার পর বারাসাতে ফ্ল্যাটের খোঁজ পায় পুলিশ। এরপর ২৪ এপ্রিল বারাসাতের ফ্লাটে তল্লাশি করে বাগুইহাটি থানার পুলিশ৷ পুলিশ তদন্ত নেমে জানতে পারে কৌশিক প্রামাণিক দু’বছর ধরে বাগুইআটি প্রতিবেশি পাড়া এলাকায় ভাড়া থাকতো। সঙ্গে এও জানতে পারে বারাসাতের ফ্লাটেই খুন করা হয়েছিল রিয়াকে। এরপর রিয়াকে খুন করার পরে বাগুইআটির প্রতিবেশি পাড়ার মতো নির্জন এলাকায় মৃতদেহ ফেলতে এসেছিলেন। এদিকে ঘটনর তদন্তে নেমে পুলিশ এও জানতে পেরেছে কৌশিক আগে বিয়ে করেছিল একটি মেয়েকে যার সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে আগেই।