হামাস স্টাইলে আক্রমণ পাকিস্তানের, পাল্টা প্রত্যাঘাতে বিপর্যস্ত একাধিক পাক শহর

জম্মু, রাজস্থান ও পঞ্জাবের একাধিক এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৪৫ মিনিট থেকে  প্রায় ৩৫ মিনিট ধরে পাকিস্তানের তরফে চালানো হয় একাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী এই হামলা রুখে দিয়ে পাল্টা আক্রমণে যায়। পাকিদের এই হামলার ধরন ও পরিকল্পনায় এটি ‘হামাস-স্টাইল’ হামলার মতো বলেই মন্তব্য করেছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
ভারতের শক্তিশালী এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম (সুদর্শন চক্র) এবং অন্যান্য মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাহায্যে অন্তত ৮টি ক্ষেপণাস্ত্র মাঝ আকাশে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে। জম্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে গুলি করে নামানো হয় ২টি পাকিস্তানি ড্রোন। জম্মু সিভিল এয়ারপোর্টেও একটি ড্রোন আছড়ে পড়ে। পঞ্জাবের পাঠানকোট ও রাজস্থানের জয়সলমীরেও ড্রোন বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়, ভারতীয় সেনা ও বায়ুসেনা একযোগে কাজ করে পাকিস্তানের একটি এফ-১৬ ফাইটার জেট এবং দুইটি জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান গুলি করে নামায়। এরপরই ভারতের তরফ থেকে পাল্টা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় পাকিস্তানে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘জম্মু, পাঠানকোট ও উধমপুরের সেনাঘাঁটিগুলি লক্ষ্য করে পাকিস্তান থেকে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। তবে তা  নিষ্ক্রিয় করে ভারতীয় সেনা। কোনও প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলেই জানিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
এদিকে জম্মু, পাঞ্জাব ও রাজস্থানের একাধিক অঞ্চলে সম্পূর্ণ ব্ল্যাকআউট করা হয়। আকাশে লাল আলোর ঝলকানি ও প্রজেক্টাইলের গতিবিধি নজের আসতে থাকে। একইভাবে পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরেও সম্পূর্ণ ব্ল্যাকআউট করা হয়।
এরই মাঝে রাতভর দেশের সুরক্ষা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিন বাহিনীর প্রধান ও চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পরিস্থিতির বিস্তারিত জানাতে দেখা করেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিএসএফ, সিআরপিএফ, সিআইএসএফ-সহ সমস্ত আধাসামরিক বাহিনীর ডিজিদের সঙ্গে কথা বলেন। এর পাশাপাশি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মার্কিন বিদেশ সচিব রুবিও’র সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং ভারতের ‘টার্গেটেড ও মেজার্ড’ প্রতিক্রিয়ার ব্যাখ্যা দেন। তিনি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গেও বৈঠক করেন এবং জানান, ভারত যুদ্ধ বাড়াতে চায় না, কিন্তু নিজের ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জবাব কঠোরভাবে দেবে।
লাগাতার এই হামলার কারণে হিমাচলের ধর্মশালায় অনুষ্ঠিত আইপিএল ২০২৫-এ পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালস-এর মধ্যে ম্যাচটি বন্ধ করে দেওয়া হয় মাঝপথেই। ১০.১ ওভারের সময় ম্যাচ থামিয়ে  খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার কারণে স্টেডিয়াম থেকে বের করে আনা হয়। একইসঙ্গে  পাঞ্জাবের সব স্কুল-কলেজ আগামী তিন দিন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চণ্ডীগড়ের স্কুলগুলোও আগামী দুই দিন বন্ধ থাকবে। অমৃতসর ও সীমান্তবর্তী অজনালা শহরের আদালতেও ৯ থেকে ১৪ মে পর্যন্ত জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনায় পাকিস্তান সম্পর্কে দাবি করেন, পাক সেনাবাহিনী এখন হামাসের মতো আচরণ করছে। এমনকি পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে এপ্রিল মাসে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এবং হামাসের প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়েছে বলেও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে দাবি করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 4 =