ডিজিটাল অ্যারেস্ট কাণ্ডে সাত সকালে কলকাতার তিন জায়গায় অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। বুধবার গণেশ টকিজ এলাকায় কমল সিং নামে এক ব্য়ক্তির বাড়িতে এই অভিযান চালানো হয় ইডির তরফ থেকে।
সূত্রে খবর, কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রীটের বাসিন্দা কমল সিং। কমল সিং এলাকায় সক্রিয় বিজেপি কর্মা বলে পরিচিত। সঙ্গে এও জানা গেছে তাঁর বাড়ি ভাড়াও দেন। এদিন সকালে ইডি আধিকারিকদের একটি দল তাঁর ঠিকানায় পৌঁছায়। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় বাড়িটি। ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে, কমল সিংয়ের বাড়িতে চারজন মহিলা পেইয়িংগেস্ট হিসেবে থাকছিলেন। ডিজিটাল অ্যারেস্টকাণ্ডে তাঁদের ঘরে ঢুকেই তল্লাশি শুরু হয়। এরপর উদ্ধার হয় বেশ কিছু নথি।
ইডি সূত্রে খবর, ডিজিট্যাল মামলায় তদন্ত শুরু করতেই বাংলায় কয়েকশো ‘মিউল অ্যাকাউন্ট’-এর সন্ধান পান ইডির আধিকারিকেরা। এদিকে এক মহিলা অভিযোগ করেছিলেন’ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর ফাঁদে পড়ে প্রায় ৪৭ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন তিনি। এরপরই ঘটনার তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশ। গ্রেফতার হন চিরাগ কাপুর ও যোগেশ দুয়ার । ধৃতদের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। প্রসঙ্গত, বেঙ্গালুরু থেকে চিরাগকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যোগেশের নাম উঠে আসে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর আর্থিক প্রতারণা মামলা হওয়ায় তদন্তে নামে ইডিও। আদালতের নির্দেশে কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া দুই অভিযুক্তকে হেফাজতে নেয় তদন্তকারীরা।
এদিকে সূত্রে খবর, প্রতারণা চক্রের মূল মাথা এই চিরাগ। বাড়ি কলকাতায় হলেও দিল্লি ও বেঙ্গালুরু থেকেই কারবার চালাতেন। বয়স্কদেরই প্রধান টার্গেট করা হত। দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে ৯০০-র বেশি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল । ইডি গোয়েন্দারা আরও জানতে পেরেছিল, কেবল ডিজিটাল অ্যারেস্ট নয়, আরও একাধিক পদ্ধতিতে সাইবার জালিয়াতির চক্র চালাত চিরাগ-যোগেশ।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, গত মাসেই ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর শিকার হন রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামীজি। জানা গিয়েছিল, রামকৃষ্ণ মিশনের গোয়ালিয়র আশ্রমের সেক্রেটারি স্বামী সুপ্রদীপ্তনন্দকে টানা ২৬ ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ করে আটকে রাখে সাইবার অপরাধীরা। তারা প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বলেই অভিযোগ ছিল। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ওড়িশার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ইডির নাম করে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর ফাঁদে ফেলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছিল। প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা খোয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ ছিল উপাচার্যর।