চিপস-চুরির অপবাদে ছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনায় উত্তাল বঙ্গ সমাজ। সোশ্যাল মাধ্যমে এই ঘটনাকে ঘিরে চলছে না আলোচনা। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের পাশাপাশি অভিযোগের তির শিশুটির সৎ বাবা ও তার মায়ের দিকেও। এই অভিযোগের তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছেন না যাঁরা এই ঘটনায় মদত জুগিয়েছিলেন তাঁরাও। এদিকে রাজ্য পুলিশ সত্রে খবর,পাঁশকুড়া থানার অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার শুভঙ্কর দীক্ষিতকে জেলা পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্যের নির্দেশে ‘ডি–মবিলাইজ়’ করা হয়। নাবালক ছাত্রকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়েরও হয় তাঁর বিরুদ্ধে। এদিকে এই ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত শুভঙ্কর। এরপরই এই সিভিক কর্মীকে কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও, বিরোধীরা একে ‘পালানোর সুযোগ’ বলেই ব্যাখ্যা করছে। এখানেই বিজেপির প্রশ্ন, পুলিশ কী করছে? প্রশ্ন তোলা হয়, একজন অভিযুক্ত সিভিক চারদিনেও অধরা কেন তা নিয়েও। প্রশ্ন উঠছে, একজন সরকারি কর্মী, যার বিরুদ্ধে সরাসরি আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ রয়েছে, তাকে খুঁজে পেতে পুলিশের এত দেরি কেন সে ব্য়াপারেও। এদিকে স্থানীয়দের আশঙ্কা,এই দেরির সুযোগে হয়তো অভিযুক্ত এলাকা ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ মে শুভঙ্করের দোকানে কাউকে না-পেয়ে বাইরে পড়ে থাকা তিন প্যাকেট চিপস তুলে নিয়ে যায় নাবালক ওই ছাত্র। আর তা স্পষ্টই দেখা গেছে সিসি ক্যামেরায়। এরপর শুভঙ্কর ধাওয়া করে তাকে ধরে ফেলে ও টাকা নেয়। শুধু তাই নয়, স্থানীায়দের সামনে তাকে চুরি করার অপবাদও দেওয়া হয়। এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে তৃতীয় এক ব্যক্তি শ্যামচরণ ভুঁইয়ারও। কারণ তিনি বিষয়টি নিয়ে প্ররোচনা দিতে শুরু করেন বলে শুরু করেন। একইসঙ্গে স্থানীয়রা জানান, নাবালকের মা ছেলেটিকে শুভঙ্করের দোকানের সামনে এনে মারধরও করেন। এই ঘটনায় আত্মসম্মানে আঘত লাগেতার। এরপরেই বাড়ি ফিরে আগাছা নাশক পান করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্র। ২২ মে তমলুক হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।
এরপরই অভিযোগ ওঠে, অভিযুক্ত শুভঙ্কর দীক্ষিত ছাত্র কৃষ্ণেন্দুকে মানসিক চাপে ফেলেছিলেন, যার ফলেই আত্মঘাতী হয় সে। নাবালকের পরিবারের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, ওই সিভিক ভলান্টিয়ার গ্রেফতার না হওয়ায় তাঁরা পুলিশের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন। একইসঙ্গে তাঁদের প্রশ্ন, পুলিশের তরফে কেন এখনও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি? অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করেছে, বিজেপি এই ঘটনায় ‘রাজনীতি’ করছে। তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি সুজিত কুমার রায়ও এদিকে জানিয়েছেন, ‘আমরাও চাই নিরপেক্ষ তদন্ত হোক, দোষীদের কঠিন শাস্তি দেওয়া হোক।’ পাশাপাশি, তিনি জানান, তৃণমূল কংগ্রেস দুঃখের এই সময়ে পরিবারটির পাশে রয়েছে। এখন নজর পুলিশের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।