ওয়াজাহত খান, যাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় পুনের আইন ছাত্রী তথা সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার শর্মিষ্ঠা পানোলিকে। গার্ডেনরিচ থানায় তাঁরই অভিযোগে শর্মিষ্ঠাকে শুক্রবার গুরুগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশ। এরপরই ওয়াজাহতের বিরুদ্ধে অন্তত তিনটি রাজ্যে দায়ের হল এফআইআর। এর মধ্যে অসম সরকার তাঁকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করেছে বলে সূত্রে খবর। সূত্রে খবর, ওয়াজাহাত খান নামে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধেই ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে হিমন্ত বিশ্বশর্মার সরকার। একটি ধর্মের উপাসনালয় নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে অসমে। এরই সূত্র ধরে ওয়াজাহতকে গ্রেপ্তার করতে অসম পুলিশ বাংলায় আসবে বলে জানিয়েছেন সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। শুধু তাই নয়, ওয়াজাহাতকে গ্রেফতারিতে অসম পুলিশকে সহায়তা করার জন্য বাংলার সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন হিমন্ত। এদিকে ওয়াজাহতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের পর থেকে তিনি পলাতক বলে লালবাজার সূত্রে খবর। এই প্রসঙ্গে তাঁর বাবা সাদাত খান জানান,ছেলের বিরুদ্ধে অসংখ্য হুমকি ও অপমানকর ফোন আসছিল। তার পর থেকেই সে নিরুদ্দেশ। এদিকে সূত্রে এ খবরও মিলছে, পশ্চিমবঙ্গ,অসম ও দিল্লিতে ওয়াজাহতের বিরুদ্ধে হয় এফআইআর, না হয় তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
কলকাতার রশিদি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ওয়াজাহত খান। এই সংগঠনই শর্মিষ্ঠা পানোলির বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগ দায়ের করেছিল। তাদের অভিযোগ, কলকাতার এই বাসিন্দার বিরুদ্ধে শ্রীরাম স্বাভিমান পরিষদ মঙ্গলবার একটি এফআইআর দায়ের করেছে। উল্লেখ্য, এই পরিষদ হল একটি দাতব্য অছি পরিষদ। গার্ডেনরিচ থানাতেই ওয়াজাহতের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, ওয়াজাহত খান ইচ্ছাকৃতভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষমূলক ও ঘৃণা প্রচার করতেন। যার প্রধান লক্ষ্য ছিল হিন্দু সমাজের প্রতি, হিন্দুদের পবিত্র ধর্মবিশ্বাস ও দেবতাদের নিয়ে। তিনি কৃষ্ণ ও সনাতনী বেদ-পুরাণ নিয়ে অবমাননাকর ও কুরুচিপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করতেন। এই প্রেক্ষিতে শ্রীরাম স্বাভিমান পরিষদ অবিলম্বে ওয়াজাহত খানের গ্রেফতারি দাবি করে কলকাতা পুলিশকে বলেছে, ১৫০০ কিমি দূর থেকে যদি শর্মিষ্ঠা পানোলিকে ধরে আনা সম্ভব হয়, তাহলে গার্ডেনরিচেরই বাসিন্দাকেও সমান গুরুত্ব দিয়ে গ্রেপ্তার করা উচিত। অভিযোগে বলা হয়েছে, আইনের চোখে সকলেই সমান।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ওয়াজাহতের বাবা জানান, রবিবার রাতের পর থেকে তাঁর ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ছেলেকে নির্দোষ ও ধর্মনিরপেক্ষ বলে দাবি করে সাদাত খান বলেন, ওর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়ে থাকতে পারে। সে এখন কোথায় আছে তাও জানেন না বাবা। তাঁর ফোন বন্ধ রয়েছে, তাই যোগাযোগও করা যাচ্ছে না।