বৈধ-অবৈধ পাসপোর্ট খুঁজতে তৎপর লালবাজার, জানালেন নগরপাল

কারা এদেশে বৈধ ভোবে দেশে প্রবেশ করছেন আর কারা অনুপ্রবেশকারী তা বাছতে চাইছে লালবাজার। সম্প্রতি দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন প্রয়োজনে বাংলাদেশ থেকে এদেশে এসেছেন অনেকেকেই। তাদের একাংশের ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে নানা কৌশলে এখানে রয়ে গিয়েছেন, এই তথ‍্যও সামনে এসেছে। তাই তাদের চিহ্নিত করে ব‍্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। এদিকে সম্প্রতি ভুয়ো নথি দিয়ে পাসপোর্ট কেলেঙ্কারি থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের হাতে ভুয়ো পরিচয়পত্র, একের পর এক অভিযোগ সামনে এসেছে। সেই ঘটনারই তদন্তে নেমে লালবাজার একাধিক ধরপাকড়ও করে। তবে তদন্ত একটা জায়গায় গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ছে বারবার। তা হল এত পরিমাণে ভুয়ো নথি তৈরির কারবারীরা কোথায়? যাদেরকে এই ভুয়ো পরিচয় পত্র দেখানোর পর গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তাদের জেরা করে কারবারী চক্রের হদিশ মিলছে, কিন্তু পুলিশের জালে ধরা পড়েনি কেউই। এখানেই পুলিশ কমিশনার মনোজ ভর্মা তাঁর বাহিনীকে আরও সক্রিয় হতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ ভার্মা জানান, পুলিশের মূল লক্ষ্য হল, এই জালিয়াতি চক্রের মূল শিকড় উপড়ে ফেলা। সিন্ডিকেট ভাঙাই মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন, শুধুমাত্র ভুয়ো নথির ব্যবহারকারীদের নয়, এই অপরাধচক্রের মূলচক্রীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে আলিপুর বডিগার্ড লাইনে একটি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশ নিতে গিয়ে সিপি মনোজ ভার্মা জানান, ‘জাল পাসপোর্ট ইস্যুতে অতীতেও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এখন আরও কড়াকড়ি করা হচ্ছে ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ায়। যেখানে যেখানে জাল নথির অভিযোগ উঠছে, সেখানেই খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে আসল সত্য।’এদিকে আবার এছাড়া, তদন্তে উঠে এসেছে কলকাতার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকেই একসময় ১৩০টি পাসপোর্ট ইস্যু হয়েছিল, যার মধ্যে ১২০টির মালিক বাংলাদেশের নাগরিক। প্রাথমিক তদন্তে সন্দেহ, কলকাতা সংলগ্ন কিছু এলাকা থেকেই একটি সুসংগঠিত চক্র এসব জালিয়াতির কারবার চালাচ্ছে। এজেন্টদের মাধ্যমে এই চক্র পুলিশ ভেরিফিকেশন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের নথি তৈরির ‘প্যাকেজ ডিল’ দেয়। পাসপোর্ট তৈরির জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার বিনিময়ে সব ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় ।  এদিকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইডিও এই পাসপোর্ট চক্র নিয়ে তদন্তে নেমেছে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু এখনও জানা যায়নি, অভিযুক্ত বাংলাদেশিরা কাদের মাধ্যমে এই কাজ করিয়েছেন, কত টাকা লেনদেন হয়েছে, এবং ঠিক কীভাবে তারা ভারতীয় নাগরিক পরিচয়ে সরকারি নথি হাতে পেয়েছেন। কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই এখন তদন্তের গতি আরও বাড়ানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 1 =