মোবাইল চুরির অভিযোগে কিশোরকে উল্টো করে ঝুলিয়ে ইলেকট্রিক শক দেওয়ার যে ঘটনা ঘটেছে তাতে সমাজের সর্বস্তর থেকে উঠেছে নিন্দার ঝড়। তবে এই ঘটনায় ধরা পড়েছে মূল অভিযুক্ত-সহ পাঁচজন। তবে খোঁজ মিলছে না ওই কিশোরের। নির্যাতনের পর থেকে উধাও হয়েছে সে।কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে ওই কিশোরকে তার হদিশ পায়নি পুলিশ। এদিকে ধৃত পাঁচজনের বয়ানে নানা অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। ফলে ওই কিশোর ঠিক কোথায় তা খুঁজে পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশকে। এমনকী এলাকার বিভিন্ন খাল, পুকুর, নদীতেও বারবার তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
মঙ্গলবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয় ( যে ভিডিয়োর সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি নিউজ ৩৬৫x ২৪)। সেই ভিডিয়োতে দেখা যায়, একটি কিশোরকে উল্টো করে ঝোলানো রয়েছে। মাঝে মাঝে তাকে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হচ্ছে। জানা গেছে, এই ঘটনাটি সন্তোষপুরের একটি জিনসের প্যান্ট রং করার কারখানার। মাস দেড়েক আগে এক পরিচিতের মাধ্যমে ওই কারখানায় কাজে এসেছিল বছর চোদ্দোর এক কিশোর। তার বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে। কারখানার মালিকের মোবাইল চুরির সন্দেশে তাকে শারীরিক নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ।
ঘটনার দিন নাবালকের দাদাও অত্যাচারিত হয়। তবে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর রবীন্দ্রনগর থানার পুলিশ কারখানার দুই কর্মীকে গ্রেফতার করে। কিন্তু, কারখানার মালিক শাহেনশাহ গা ঢাকা দেন। এরপর বৃহস্পতিবার মুম্বই থেকে বছর আঠাশের এই যুবককে গ্রেফতার করে রবীন্দ্রনগর থানার পুলিশ। তাঁর সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় আরও ২ জনকে। তার মধ্যে একজন শাহেনশাহর দাদা ফিরোজ আলম। অন্যজন তাদের নাবালক ভাগ্নে। জানা গিয়েছে, মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন ধরে শাহেনশাহকে ধরা হয়। পুলিশের চোখের ধুলো দিতে তাদের বেশির ভাগ ফোনের সুইচ অফ করে দিয়েছিল। কিন্তু, একটি ফোন হাওড়া স্টেশনে অন করা হয়। তাতেই লাইভ লোকেশন ট্র্যাক করে বোঝা যায় অভিযুক্তরা ট্রেন ধরে বাংলা ছেড়ে বাইরে পালাচ্ছে। এদিকে খবর মেলে শাহেনশাহ আগে ৭ বছর মুম্বইয়ে কাজ করেছেন। তাদের ধরতে রবীন্দ্রনগর থানার একটি দল মুম্বই যায়। রেল পুলিশের সাহায্য নিয়ে তিনজনকে ধরাও হয়। ধৃত ৩ জনকে শুক্রবার মুম্বইয়ের আদালতে তুলে শনিবার ট্যানজিট রিমান্ডে কলকাতায় আনা হবে।
তবে এই মুহূর্তে পুলিশের পাখির চোখ নির্যাতিত ওই কিশোরকে উদ্ধার করা। এই মুহূর্তে সে কোথায় রয়েছে, তা নিয়ে কোনও তথ্যই বা সূত্র কিছুই পায়নি পুলিশ। তার সন্ধানে নানা জায়গায় চলছে তল্লাশি। শুক্রবারও কারখানায় গিয়ে তল্লাশি চালায় পুলিশ।