বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক তছরুপের ঘটনার তদন্তে ইডি

একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে থাকা একটি স্থায়ী আমানতের টাকা সময়ের আগেই তুলে নেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছিল ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। ব্যাঙ্কের তরফ থেকে একটি চিঠি দিয়ে জানানো হয়, প্রায় ১ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেভিংস অ্যাকাউন্টে না ট্রান্সফার না হয়ে তা  একটি বেসরকারি ঠিকাদার সংস্থার অ্যাকাউন্টে জমা করতে হবে বলে নির্দেশ এসেছে। এই ঘটনায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। এরপর জল গড়ায় বহুদূর। এবার সেই ঘটনারই তদন্তে নামল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট অর্থাৎ ইডি। আর এই ঘটনায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় ইডির স্ক্যানারে ৩ আধিকারিক!
সূত্রে খবর, গত বছর ব্যাঙ্কে টাকা তুলে নেওয়ার চিঠি জমা পড়তেই সন্দেহ হয়েছিল ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানা যায়, তারা এমন কোনও চিঠি জমা দেননি। বর্ধমান থানায় এই নিয়ে অভিযোগ দায়ের হতেই তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্ত এগোতেই জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে থাকা স্থায়ী আমানতের ১ কোটি ৯৩ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮৭৬ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টে না এসে অন্যত্র চলে গিয়েছে। এই ঘটনায় বর্ধান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নতুন করে থানায় অভিযোগ করেন। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। চার্জশিট পেশও করেছে রাজ্য গোয়েন্দা দপ্তর।
তবে এখানেই থামছে না ঘটনা। এবার এই ঘটনার তদন্ত গেল কেন্দ্রীয় এজেন্সি ইডি-র হাতে। ইডি সূত্রে খবর, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্তে নেমে যে ব্যাঙ্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী আমানতের টাকা ছিল, সেখানকার জোনাল ম্যানেজারের কাছে বিশদ তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছেন গোয়েন্দারা। পাশাপাশি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী আমানত প্রকল্পের অন্তত ৩টি অ্যাকাউন্ট সম্বন্ধে বিশদ তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই অ্যাকাউন্টগুলির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগে কারা টাকা তোলার অনুমোদন দিয়েছিল, সেই বিষয়েও তথ্য চেয়েছেন গোয়েন্দারা। এর পাশাপাশি ২০২১-২০২৪ অবধি ওই ব্যাঙ্কের তিন জন আধিকারিকের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির বিবরণও চাওয়া হয়েছে বলে খবর। সেই সঙ্গেই কেন্দ্রীয় এজেন্সির দফতরে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের অফিসারদের তলব করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা স্থানান্তরের সময় ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংশ্লিষ্ট শাখায় সার্কেল হেড এবং ডেপুটি সার্কেল হেড পদে কারা ছিলেন সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine + four =