এক বছর আগে সতর্ক করেছিলেন বোয়িং সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার

আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনা আরও একবার প্রশ্ন তুলে দিল বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে।  এদিকে এই ঘটনার প্রায় এক বছর আগে বোয়িং সংস্থার এক ইঞ্জিনিয়ার স্যাম সালেহপুর সতর্ক করেছিলেন, ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানের ফিউজেলাজ জোড়ার সময় শর্টকাট নিয়েছিল আমেরিকান এয়ারক্রাফট নির্মাণকারী সংস্থা। এই ভুল পদ্ধতির কারণে বিমানের কাঠামো দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং বহুবার উড়ানের পরে মাঝ আকাশেই ভেঙে পড়তে পারে বিমান। এর এক বছরের মধ্যেই ঘটে গেল এমনই এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
প্রসঙ্গত, স্যাম সালেহপুর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এফএএ-অর্থাৎ ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্য়াডমিনস্ট্রেশনকে জানান, ৭৮৭ বিমানের বিভিন্ন অংশ জোড়ার সময় অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করা হয়, এরফলে সময়ের সঙ্গে বিমানের কাঠামো দুর্বল হয়ে যেতে পারে, যা বিপজ্জনক। এমনকী কর্মীদের বিমানের পাখার অংশের উপর জোড়া লাগাতেও দেখা গেছে বলে দাবি করেন তিনি। সঙ্গে এও জানান, ৭৮৭-র পাশাপাশি ৭৭৭ মডেলেও একই সমস্যা রয়েছে। এর রেশ ধরে তিনি এও দাবি করেন, ১০০০-এরও বেশি ড্রিমলাইনারেও রয়েছে এই ত্রুটি। তবে বোয়িংয়ের তরফ থেকে  এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়,তারা ইতিমধ্যেই এই সমস্যাগুলির সমাধান করেছে এবং বিমানগুলি উড়ানের জন্য একেবারেই নিরাপদ।
এদিকে এই দুর্ঘটনার তদন্ত করছে ডিরেক্টর জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশন। যদিও এখনও পর্যন্ত ওই ইঞ্জিনিয়ারের অভিযোগের সঙ্গে দুর্ঘটনার কোনও সরাসরি যোগ খুঁজে পাওয়া যায়নি, তবে স্বাভাবিকভাবেই ফের বোয়িং ৭৮৭-এর নির্মাণ ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালেও ফিউজেলাজ গ্যাপের কারণে বোয়িং ৭৮৭-এর ডেলিভারি প্রায় দুই বছর বন্ধ রেখেছিল এফএএ। এর আগেও বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। ২০১৯-২০২০ সালে ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের দুটি দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় ৩৪৬ জনের। ২০২৪ সালে ৭৩৭ ম্যাক্স ৯-এর দরজা মাঝআকাশে খুলে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। তবে এদিনের এই দুর্ঘটনার পর বোয়িং ৭৮৭ দুর্ঘটনার তদন্তের দিকে তাকিয়ে রয়েছে সারা বিশ্ব। এদিকে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতে আরও কড়াকড়ি এবং  এবং যাত্রী পরিষেবাতেও আরও স্বচ্ছতা দরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 + 2 =