ওবিসি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে মুখ পুড়ল রাজ্যের

ওবিসি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে আক্ষরিক অর্থেই মুখ পুড়ল রাজ্য সরকারের। ওবিসি সংক্রান্ত যত বিজ্ঞপ্তি রাজ্য সরকার এ পর্যন্ত প্রকাশ করেছে সেগুলোর উপর অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ জারি করল ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার এই নির্দেশ দেন। আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত এই নির্দেশ বলবৎ থাকবে। তবে যাঁরা ১৯৯৩ সালের আইন অনুযায়ী ২০১০ সালের আগে ওবিসি সার্টিফিকেট পেয়েছেন, তাঁদের চাকরি বা ভর্তির নিয়োগে বাধা থাকছে না।
আদালত সূত্রে খবর, এই মামলায় মামলাকারীদের দাবি ছিল,কোর্টের নির্দেশ মেনে সমীক্ষা করেনি রাজ্য। কয়েকটি পরিবারের মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে রাজ্য সরকার কোর্টে জানিয়েছিল, এই মামলা আটকে থাকায় কলেজে বা অন্য নানা ক্ষেত্রে ভর্তি প্রক্রিয়া আটকে রয়েছে। একাধিক কাজের সমস্যা হচ্ছে।
পূর্বের ওবিসি মামলা সুপ্রিম কোর্টে চললেও কোন কোন জনজাতিকে ওবিসি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে, তার একটি নির্দিষ্ট তালিকা কিছুদিন আগে প্রকাশ করে অনগ্রসর সম্প্রদায় উন্নয়ন কমিশন। সেখানে ১৪০টি জনগোষ্ঠীকে ওবিসি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তা নিয়েও এদিন প্রশ্ন তোলা হয় হাইকোর্টে। তারপরই ওবিসি নিয়ে সব বিজ্ঞপ্তিতে অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।
এদিকে এদিন এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা জানান, ‘এখনও পর্যন্ত রাজ্যের তরফে বিভিন্ন বিষয়ে যে চার থেকে পাঁচটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তার মাধ্যমে সরাসরি আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে। আপনারা ২০১২ সালের ওবিসি আইন অনুযায়ী অর্ধেক কাজ করেছেন।’ আর এখানেই বিচারপতি মান্থার প্রশ্ন, তারপর আবার ১৯৯৩ সালের আইনে ফেরত গিয়েছেন কেন  তা নিয়েও। সঙ্গে এ প্রশ্নও করেন, কেন ২০১২ সালের আইনে সংশোধনী আনা হল না সে ব্য়াপারেও।
এর পাশাপাশি বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী জানান,’ আগেও বলেছি ওবিসি শ্রেণীভুক্ত ৬৬ টি সম্প্রদায়কে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুন। আপনারাও বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষা করছেন। আমরাও বলেছি যে ঠিক আছে তাহলে সেই অবধি কোনও পদক্ষেপ করবেন না।’
অর্থাৎ,কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলায় আগে যে মূল নির্দেশ দিয়েছিল, সেখানে জানানো হয়েছিল সরকারকে কীভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ করতে হবে। মূল নির্দেশনামাতে তার উল্লেখও ছিল। কিন্তু সরকার সেই নির্দেশকে মান্য়তা দেয়নি। ২০১২ পর্যন্ত যে ওবিসি আইন ছিল তা একটা সময় পর্যন্ত মেনেছে সরকার। কিন্তু পুরো না মেনে ১৯৯৩ সালের আইন অনুযায়ী করেছে। যা ঠিক নয়। ২০১২ সালের আইনে যে সংশোধনী আনার দরকার ছিল তা করা হয়নি। সেই কারণে সরকার ওবিসি সংক্রান্ত যে যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে তাতে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − eight =