প্রকাশিত হল মাধ্যমিকের রিভিউ ও স্ক্রুটিনির ফল। চলতি বছর মাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হয়েছিল ২ মে। ফলপ্রকাশের পরে প্রায় ৪৬ দিন পরে প্রকাশিত হল মাধ্যমিকের নম্বর যাচাই এবং রিভিউ-এর ফল। মাধ্যমিক পরীক্ষার এই মূল্যায়নের জেরে বদল এল মাধ্যমিকের মেধা তালিকাতেও। ২০২৫-এর মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের পর দেখা গিয়েছিল প্রথম দশে রয়েছেন ৬৬জন। এরপর এই রিভিউ এবং স্ক্রুটিনির পর রেজাল্ট বের হতে এই তালিকায় যোগ হল আরও ৯ জন। অর্থাৎ প্রথম দশের তালিকায় চলে এল ৭৯জন পরীক্ষার্থী। মাধ্যমিকের পুনর্মূল্যায়নের ফলাফলে র্যাঙ্ক বদল হল কৃতীদের। যেমন, মেধাতালিকার চতুর্থ স্থানে থাকা পূর্ব মেদিনীপুরের সুপ্রতীক মান্নার নম্বর বৃদ্ধি পাওয়ায়, সে দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছে। তাঁর আগে প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৯২। এখন বেড়ে হয়েছে ৬৯৪। এই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, মোট ১২, ৪৬৮ জনের পরীক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বর বদলেছে। ২ মে ফল প্রকাশের ৪৮ দিনের মাথায় মাধ্যমিকের নম্বর যাচাই (স্ক্রুটিনি) এবং খাতা পুনর্মূল্যায়ন (রিভিউ)-এর ফল প্রকাশিত হল।
মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে জানা গিয়েছে, রিভিউয়ের পর নম্বর বদল হয়েছে ১ হাজার ১৮২টি উত্তরপত্রে। এই ভাবে নম্বর বদল হওয়ায় মেধা তালিকায় চতুর্থ স্থান থেকে একজন উঠে এসেছে দ্বিতীয় স্থানে। এর পাশাপাশি মেধা তালিকায় মোট চারজনের অবস্থান বদল হয়েছে। অষ্টম স্থানে থাকা দুজনের নম্বর বেড়ে তাঁরা উঠে এসেছে সপ্তম স্থানে। মালদহ রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের ছাত্র সৃজন প্রামাণিকের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮। এখন বেড়ে হয়েছে ৬৮৯। একইসঙ্গে কংসাবতী শিশু বিদ্যালয়ের পড়ুয়া সৌপ্তিক মুখোপাধ্যায়েরও প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৮৮। বেড়ে হয়েছে ৬৮৯। দশম স্থানে একজন এসেছে নবম স্থানে। নব নালন্দা শান্তিনিকেতনের ছাত্র সাম্যক দাস। আগে প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৮৬। এখন বেড়ে হয়েছে ৬৮৭।
বালুরঘাট হাইস্কুলের ছাত্র চয়ন রায় মেধাতালিকায় একাদশ থেকে এসেছে নবম স্থানে। আগে প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৮৫। এখন বেড়ে হয়েছে ৬৮৭। পূর্ব মেদিনীপুরের রামকৃষ্ণ মিশন শিক্ষা মন্দিরের ছাত্র রূপম দীক্ষিতের আগের মেধাতালিকায় স্থান ছিল
দ্বাদশে। প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৮৪। এখন বেড়ে হয়েছে ৬৮৭। অর্থাৎ, সে চলে এল নবম স্থানে।
কোচবিহারের মাথাভাঙা গার্লস হাইস্কুলের পড়ুয়া অন্যন্যা মজুমদার মেধা তালিকায়
একাদশে থাকলেও এখন তাঁর স্থান দশম । আগে প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৮৫। এখন বেড়ে হয়েছে ৬৮৬। এর পাশাপাশি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সারদা বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের পড়ুয়া প্রেরণা বৈদ্যেরও আগে প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৮৫। এখন বেড়ে হল ৬৮৬। অর্থাৎ সেও চলে এল প্রথম দশে। এদিকে মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের পড়ুয়া প্রজ্ঞান দেবনাথের আগে প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৮৪। এখন বেড়ে হল ৬৮৬। অর্থাৎ, মেধাতালিকতায় তাঁর স্থান দাঁড়াল দ্বাদশ থেকে দশমে। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের পড়ুয়া সায়নদীপ ঘোষ। আগের প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৮৪। এখন বেড়ে হয়েছে ৬৮৬ হওয়ায় সেও প্রথম দশের মেধা তালিকার অন্তর্ভুক্ত হল।
এছাড়াও ত্রয়োদশ থেকে দশমে এসেছেন কন্টাই মডেল ইন্সস্টিটিউশনের পড়ুয়া সোহম করণ। আগে প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৮৩। এখন বেড়ে হয়েছে ৬৮৬।
মাধ্যমিক পর্ষদ সূত্রে খবর, রেজাল্ট বের হওয়ার পরে ৫৬ হাজার পড়ুয়া স্ত্রুটিনির জন্য আবেদন করেছিল। ৩৯০০ জন পড়ুয়া পিপিএস এর জন্য আবেদন করেছিল। ১৯১ জন পিপিআর করেছিল। পিপিএস করার ফলে নম্বর বদল হয়েছে ২৪০০ জনের। পিপিআরে ক্ষেত্রে নম্বর বদল হয়েছে ৫৬ জনের।
এই প্রসঙ্গে আগেই মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়েছিল, যে সমস্ত পড়ুয়ার নম্বর পরিবর্তন হচ্ছে তাঁদের পুরনো মার্কশিট ও সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। তারপরে নতুন সংশোধিত মার্কশিট ও সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে। পিপিএস, পিপিআর-এর ফল প্রকাশের ৭ দিনের মধ্যে স্কুলগুলিকে নির্ধারিত আঞ্চলিক দপ্তরে জমা দিয়ে নতুন মার্কশিট ও সার্টিফিকেট নিতে হবে।